ব্রহ্মপুত্রঘেঁষা মনোহরিণী নিঝুম দ্বীপ ।
সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক নৈসর্গের বিশালায়তনের এ বিশ্ববিদ্যালয় এখানকার শিক্ষার্থীদের কাছে তো বটেই, এখানে আসা নতুন-পুরাতন ও দর্শনার্থীদের কাছেও অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি।
এই ক্যাম্পাসের অনতিদূরেই ব্রহ্মপুত্রের তীর ঘেঁষে এক দ্বীপ। স্বচ্ছ নীলাভ জলধারা আর অপূর্ব প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও জল-সবুজের মিতালী এ দ্বীপকে করে তুলেছে অনন্য।
তাই বাকৃবিতে আসা দর্শনার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমীরা নিদেনপক্ষে হলেও একবার ঢুঁ মেরে যেতে ভোলেন না এই দ্বীপে। ফলে অল্পসময়ের মধ্যেই এ দ্বীপ হয়ে উঠেছে অঘোষিত এক পর্যটন স্পট।
দেশের আরো অনেক নৈসর্গিক জায়গায় মতো প্রচার না পাওয়া এ দ্বীপটিরও কোনো নাম ছিলনা। তবে স্থানীয় লোকমুখে ও বাকৃবি শিক্ষার্থীদের দেওয়া নাম ধারণ করে এখন দেশময় এই দ্বীপ ‘নিঝুম দ্বীপ’ নামেই পরিচিত।
প্রচারের আলোয় আসার পর থেকেই বাকৃবি শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক পদচারণা ছাড়াও আশপাশ ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের কাছে এই নিঝুম দ্বীপ এখন যেন পুরোদন্তুর এক পর্যটন স্পট।
মনোহারিণী এ দ্বীপে দাঁড়িয়ে আকাশ-আর নদীর নীলের মিলন দেখে, কিংবা পায়ের নিচে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের জলে শিহরিত প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু মাত্রই বিমোহিত হবেন।
বাকৃবি ক্যম্পাস থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদের পাঁড় ঘেঁষা নিঝুম দ্বীপ। সবুজের সমারোহ আর নিরিবিলি পরিবেশের এক অনবদ্য সৃষ্টি ওই দ্বীপ। দ্বীপের চারপাশজুড়ে সুনসান নীরবতা। নেই তেমন জনবসতি।
হাতে গোনো কয়েকটি বাড়িঘর ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়বে না। যতদূর চোখ যায় সরু ব্রহ্মপুত্রের জলরাশির খেলা ও আর দ্বীপে সারি সারি গাছ। অবশ্য দিনের বেলায় প্রায়ই নদীতে চোখে পড়ে জেলেদের ব্যস্ততা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড় সংলগ্ন মেঠো পথ ধরে যেতে হয় মনোমুগ্ধকর নিঝুম দ্বীপে। বন্ধু-পরিজনদের কাছে রসিয়ে-রসিয়ে এ নিঝুম দ্বীপের কাব্য করতে চাইলে তার জন্য রয়েছে নৌকা করেও নিঝুম দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ।
এ জন্য রয়েছে বাকৃবি থেকে যাওয়া নৌপথ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রহ্মপুত্র নদের ঘাট থেকে অল্প খরচে মাত্র আধাঘণ্টা খরচায় নৌকা আপনাকে পৌঁছে দেবে মন হরণ করে নেওয়া নিঝুম দ্বীপে।
বাকৃবির একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল থেকে টানা বিকেল পর্যন্ত ক্লাস শেষে মাঝে-মধ্যেই তারা দলবেঁধে আসেন নিঝুম দ্বীপে।
শিক্ষার্থীরা শুধু ঘুরতে এলেও এখন দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেকেই এখানে পিকনিক করতে আসেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠন এখানে বনভোজনে আসে।
এই দ্বীপে রয়েছে মেহগনি, আকাশমনি, ইউক্যালিপটসসহ বিরুৎ ও গুল্ম জাতীয় বেশ কয়েক ধরনের গাছ। স্থানীয়রা এই দ্বীপকে ব্যবহার করেন গোচারণ ভূমি হিসেবে। গাছের সারি পেরিয়ে দ্বীপের ভেতরে গেলে দেখা মেলে বিস্তৃর্ণ সমতলভূমির।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে শুধু ঘোরাঘুরি বা বনভোজনেই লোকজন এখানে আসতেন। তবে বর্তমানে শ্যুটিং স্পট হিসেবেও এর কদর বাড়ছে।
তাই ভ্রমণপিপাসু যে কেউ দলদলসহ ঘুরে যেতে পারেন নিঝুম দ্বীপ। সঙ্গে দর্শন তালিকায় যোগ হবে দেশের কৃষি শিক্ষার তীর্থ বাকৃবির সৌন্দর্য।
আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন সবাই। ধন্যবাদ।