বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৬

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ,চট্টগ্রাম। 


শান্ত ঢেউ আর নীল জলরাশি। পাথরে আছড়ে পড়া ঢেউ অনাবিল শান্তি দেবে আর দেবে দৃষ্টিসুখ। বিভিন্ন রঙ ও আকৃতির জাহাজ চলাচল আপনাকে দেবে রোমাঞ্চকর অনুভূতি। সী বিচ ধরে হাঁটা আর নীল জলরাশির কলকল শব্দ আর ঢেউয়ের র্গজন অন্য ভূবনে নিয়ে যাবে র্পযটকদের। প্রবল পাথরে বসে ঢেউ আর জাহাজ  দেখা বাড়তি আনন্দ দেবে। সী বিচ সংলগ্ন দোকান থেকে কনোকাটা আর সামুদ্রকি মাছ কেনা বাড়তি আনন্দ দেবে ও তা খেয়ে বাড়তি অনুভূতি দেবে। সুর্যোদয় আর সুর্যাস্তে অপুরুপ দৃশ্য পাথরে বসে বা সী বিচ থেকে অতুলনীয় আর মোহনীয় দৃশ্য সৃষ্টি হয়। পাশ্ববর্তী কর্ণফুলি প্রক্রিয়াজতকরণ এলাকা দেখতে যেতে পারেন তারপর ঝাউবন পেরিয়ে পতেঙ্গায়।

পতেঙ্গা হচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৪ কিমি দূরে অবস্থতি বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় সমুদ্র সৈকত। দ্বিতীয় কক্সবাজার। কর্ণফুলী নদীর মোহনায় এ সমুদ্র সৈকত অন্য আর্কষনীয় ভ্রমন স্পট। এখানে ভ্রমনে দেবে নতুনত্ব আর দেবে নতুন স্বাদ।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন করতে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন আবাসকি হোটেলে রাতযাপন করতে পারেন। অলংকার বা জিইসি/সিইপি রোডে  বিভিন্ন দাম ও মানের থাকা ও খাওয়ার হোটেল রয়েছে।

ঢাকা থেকে চলে আসুন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। তারপর অলংকার মোড় থেকে সী বিচ লেখা বাসে অথবা সিএনজি/অটোবাইকে চড়ে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই চলে আসতে পারবেন পতেঙ্গা সী বিচে।

সী চিচের দোকান থেকে হস্তশল্পিসহ বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করতে পারবেন। বিভিন্ন সামুদ্রকি মাছ ক্রয়রে জন্য বিভিন্ন দোকান রয়েছে- যেখান থেকে আপনার পছন্দ মতো কেনাকাটা করতে পারবেন।   




ভ্রমণেই আনন্দ। আজ এ পর্য‍ন্তই। ধন্যবাদ সবাইকে। 





সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ।

সেন্টমার্টি‍ন ভ্রমণে আনন্দ ।



বাংলাদেশের দক্ষিণের শেষপ্রান্তে টেকনাফ উপজেলা। তার শেষে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। স্থানীয় ভাষায় ‘নারিকেল জিনজিরা’।আমাদের দারুচিনি বা স্বপ্নের দ্বীপ। প্রায় দশ হাজার অধিবাসী নিয়ে এ দ্বীপ যা একটি ইউনিয়ন, সেন্টমার্টিন। স্বপ্নের এ প্রবাল দ্বীপে যেতে যেতে অপুর্ব দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন এ যেতে আপনাকে অবশ্যই জাহাজে বা লঞ্চে ভ্রমণ করতেই হবে। সকাল ৯-৩০ টায় টেকনাফ জেটি ঘাট থেকে বেসরকারী শিপে চেপে প্রমত্তা নাফ নদী ও নীল জলরাশির সাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ খুবই রোমাঞ্চকর-সাথে উপভোগ্যও। জাহাজে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা আর লঞ্চে যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা। জাহাজগূলো বিকাল ৩ টায় সেন্টমার্টিন উপকুল ছেড়ে আসে টেকনাফের উদ্দেশ্যে। 

বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভক্তকারী নাফ নদীতে কিছুক্ষন ভ্রমন করে যেতে যেতে বাংলাদেশের লেজ দেখতে খুবই মনোরম। পাহাড় সমৃদ্ধ এ লেজ দেখলে বাংলাদেশের মানচিত্রের দক্ষিনের লম্বা লেজের কথা মনে পড়বে।জাহাজ থেকে ছবির মতো, রুপকথার মতো, চমতকার অনুভূতি। তারপর সাগর চ্যানেলে প্রবেশ। জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, গাংচিল বা বালিহাঁসের উড়াউড়ি  আর নীল জলরাশি আপনাকে বিমোহিত করবেই।যাওয়ার পথে বামদিকের বা পুর্ব পাশের মিয়ানমারের পাহাড় বিশিষ্ট স্থলভাগ আর কাঁটাতারের বেড়া অন্যরকম দৃষ্টিসুখ দেবে।নাফ’র ঘোলা পানি পেরিয়ে সাগরের নীলজলরাশি আপনাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে। 

মাঝে মাঝে সাগরজলে ডলফিনের খেলার সাথে জাহাজযাত্রীর হাততালি ভ্রমনক্লান্তি আর খরচের কথা ভুলিয়ে দেবে বলে আমার বিস্বাস। দু’ঘন্টা জাহাজ ভ্রমনের পর আবছা আবছা দ্বীপের ছবি ভেসে আসবে-রোমাঞ্চ বাড়িয়ে দিবে। এ বুঝি স্বপ্নের দ্বীপের ছবি।হ্যাঁ এটাই সেন্টমার্টিন-স্বপ্নের দ্বীপ।

জাহাজে ধাক্কা লাগা বড় বড় ঢেউ আর প্রোপালারের ফেনিল সাদা ঢেউ দেখতে দেখতে অবশেষে দুঃ ১২-১৫ টায় পৌঁছালাম ‘নারিকেল জিনজিরা’ দ্বীপে। অন্যান্য সৈ্কতে পানির ঘোলা স্রোত হলেও এ দ্বীপের চারিদিকে নীল স্বচ্ছ জলরাশি। লবনাক্ত সাগরের এ পানিতে পা ভিজাতে ভালোই লাগবে।  এ দ্বীপে প্রচুর পরিমানে আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে, ভিন্ন মান,ভিন্ন ভাড়ায়। প্রচুর নারিকেল গাছ এ দ্বীপকে বিশিষ্ট করে তুলেছে-করেছে মোহনীয়।স্কুল,উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এখানে। পর্যটকদের জন্য প্রচুর আবাসিক হোটেল ছাড়াও কেনাকাটার প্রায় সব রকমের দোকান রয়েছে।তবে বাজার মুল্য তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি। রিক্সা/ভ্যানে চড়ে ছোট্ট এ দ্বীপটাকে ঘুরে দেখা যায় অনায়সে। সাথে রাত যাপন আনন্দকে দ্বিগুন করবে। সেন্টমার্টিন থেকে স্পিড বোট বা লঞ্চে ছেড়াঁ দ্বীপ বা শাহপরীর দ্বীপ ভ্রমন চিত্তাকর্ষক হবে। মৎস্য আহরণ/বিক্রি এ দ্বীপের অধিবাসীদের বেশির ভাগই পেশা। 

কিভাবে যেতে হবে আর আবাসিক ব্যবস্থাঃ
এ দ্বীপে বা টেকনাফ অথবা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিভিন্ন মান/দামের আবাসিক হোটেল রয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম/কক্সবাজার পরিবহন গাড়ীতে তারপর টেকনাফ।অথবা ঢাকা-টেকনাফ সরাসরি বাসে।তারপর জাহাজে সাগর পেরিয়ে  সেন্টমার্টিন। শ্যামলি,সৌদিয়া,হানিফ,এস আলম প্রভৃতি পরিবহনে যেতে পারেন ভাড়া লাগবে এসি ১৫০০/= আর নন এসি ১০০০/=। ট্রেনেও চিটাগং যেতে পারেন তারপর বাসে।   


ধন্যবাদ সবাইকে। বেড়িয়ে আসুন ভালো নিঃসন্দেহে। 

মুন্সীগঞ্জের একটি প্রাচীন মসজিদ।

মুন্সিগঞ্জের একটি প্রাচিন মসজিদ।  

ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মুন্সীগঞ্জ জেলা। বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরীর সঙ্গমস্থল এখানেই। মুন্সীগঞ্জ জেলা একসময় বিক্রমপুর নামে পরিচিত ছিল। সেখানে সেনবংশীয় রাজাদের বসবাস ছিল। সেন রাজবংশ, চন্দ্ররাজ বংশ ও বর্ম রাজবংশের রাজধানী। অর্থাৎ বঙ্গ-সমতটের রাজধানী শহর ছিল মুন্সীগঞ্জ। জেলা শহর মুন্সীগঞ্জ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে দরগাহবাড়ি। এ দরগাহবাড়িতে রয়েছে সুলতানী শাসনামলের একটি মসজিদ। বিভিন্ন বই-পুস্তক ও প্রাচীন দলিল-দস্তাবেজে এটি ‘বাবা আদম শহীদ’ মসজিদ নামে পরিচিত। কিন্তু মসজিদের শিলালিপি অনুসারে এ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহান মালিক কাফুরশাহ্।
রাজা বল্লালসেনের সময়কালে এক ধর্মপ্রচারক যার নাম ছিল বাবা আদম। যিনি বল্লালসেনের হাতেই নিহত হন।
ইউসুফ শাহের বিক্রমপুরের শাসক কাফুরশাহ্ ১৪৭৯ সালে একটি মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। যা বাবা আদম (রহ.) মসজিদ নামেই পরিচিতি লাভ করে। উত্তর-দক্ষিণে মসজিদের আয়তন ৪৩ ফুট। আর পূর্ব-পশ্চিমে ৩৬ ফুট। মসজিদের দেয়াল প্রায় সাড়ে ৩ ফুট চওড়া। মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে ৩টি মেহেরাব রয়েছে। পূর্ব দেয়ালে মসজিদে প্রবেশের জন্য ৩টি দরজা রয়েছে। মেহেরাবগুলো অলংকৃত। মাঝখানেরটা অন্য দুটির চেয়ে প্রশস্ত। মসজিদটি নির্মাণের সময় ১০ ইঞ্চি, ৭ ইঞ্চি, ৬ ইঞ্চি ও ৫ ইঞ্চি মাপের লাল পোড়ামাটির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের চারকোণে ৪টি টারেট রয়েছে। যা অষ্টাভুজাকৃতির। চমৎকার কারুকার্যখচিত এ মসজিদটির ছাদে ৬টি গম্বুজ রয়েছে। ছাদের ভর রাখার জন্য মসজিদের ভেতরে দুটি স্তম্ভ ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদ বক্রাকার কার্নিশ। বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে মসজিদটি নির্মিত। ছাদের পানি সরানোরও ব্যবস্থা চমৎকার। মসজিদের পূর্বপাশে পাকা উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ। মসজিদটি ১৯৪৮ সাল থেকে পুরাতত্ত্ব বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৯১-৯৬ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বাবা আদম মসজিদের ছবি সংবলিত ডাকটিকিট প্রকাশ করে। কারুকার্যখচিত এ মসজিদটির নির্মাণে মালিক কাফুরশাহের সময় লেগেছিল ৪ বছর। অর্থাৎ বাবা আদম (রহ.) মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয় সুলতান ফতেশাহের সময় ১৪৮৩ সালে। মসজিদের পূর্ব দেয়ালে মাঝখানের দরজার ঠিক ওপরে একটি আরবি শিলালিপি প্রোথিত রয়েছে। শিলালিপির ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন ব্লকম্যান।

যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চে, গুলিস্তান থেকে বাসে সিপাহীপাড়ায় নামলে এ মসজিদে আসা যাবে। মসজিদটি শুধু মুন্সীগঞ্জেরই নয়, সমগ্র দেশেরই ইতিহাস ও ঐতিহ্য। সুলতানী আমলের ইতিহাস বহন করে চলছে মহাকালের দিকে।