সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬

সাজেকের পাহাড় চূড়ায়।


বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণগন্তব্যগুলোর একটি সাজেক। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় জায়গাটির অবস্থান। সাজেকের পাহাড়চূড়া থেকে পুরো রাঙামাটির চারপাশ দৃষ্টিগোচর হয় বলে একে রাঙামাটির ছাদও বলা হয়।

খাগড়াছড়ি শহর ছেড়ে সাজেকের পথে কিছুদূর গেলেই পাহাড়ের উচ্চতা বাড়তে থাকে। সামনের দিকে পাহাড়গুলো যেন আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত।
চলতে চলতে প্রথমে পথে পড়বে দিঘীনালা। সেখান থেকে আরও চললে বাঘাইহাট বাজার। এখানে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে পর্যটকদের রিপোর্ট করে যেতে হবে।  বাঘাইহাট ক্যাম্প থেকে সামনে পড়বে তিন নদীর মিলনস্থল গঙ্গারাম মুখ। সেখানেই মাসালং আর গঙ্গারাম নদী এসে মিলেছে কাসালং নদীতে। এই কাসালংই কাপ্তাই হ্রদ হয়ে কর্ণফুলীতে মিলেছে। কংক্রিটের সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে পাহাড়ি এ নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
এর পরে সাজেক ভ্যালির দিকে চলতে হবে উঁচু নিচু পাহাড়ের বুক চিড়ে। ঘন সবুজ পাহাড়ের মাঝে কালো পিচঢালা পথ, সর্পিল আঁকাবাঁকা। কোথাও কোথাও পাহাড়ের উচ্চতা এত বেশি যে উপরে উঠতে গাড়ির ত্রাহি অবস্থা, যেন দম ফুরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।
এ পথে চলতে সড়কের দুই পাশে চোখে পড়বে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। বিশেষভাবে বাঁশের মাচানের উপর তৈরি করা এসব বাড়িঘর।

সাজেক যাওয়ার পথে পড়বে মাসালং সেনাক্যাম্প। সেখানে রিপোর্ট করে একটু সামনে গেলেই মাচালং বাজার। পাহাড়ি এ বাজার সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার বসে। তবে শুক্রবারে বাজারের অবস্থা থাকে বেশি জমজমাট। দূর দূরান্ত থেকে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষেররা এ বাজারের আসেন বিকিকিনি করতে।
মাসালং বাজার থেকে সাজেকের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। তবে এ পথে পাহাড়ের উচ্চতা আরও বেশি। এখান থেকে কয়েকটা বাঁক ঘুরলে দূরে দেখা যায় সাজেক ভ্যালি।
সাজেক ভ্যালির শুরুতেই রুইলুই পাড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। এ গ্রামের অধিবাসীদের মধ্যে বেশিরভাগ ত্রিপুরা ও লুসাই।১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামটিই এখন সাজেক পর্যটন এলাকার মূল আকর্ষণ। রুইলুই পাড়ার শুরুতেই আছে এখানকার সর্বাধুনিক সাজেক রিসোর্ট। আর প্রথম হেলিপ্যাড ছাড়িয়ে অন্যপ্রান্ত আছে আরেকটি রিসোর্ট ‘রুনময়’। দুটি রিসোর্টই সেনা পরিচালিত।
রুইলুই পাড়ার শেষ প্রান্তে আছে দেশের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্প।

বিজিবি ক্যাম্প থেকে প্রায় এক কিলোমিটার সামনে কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় আরেক পাহাড়ি গ্রাম কংলাকপাড়া। এ গ্রামেও লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বসবাস। কংলাক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় খালি চোখে দেখা যায়।
এ গ্রামের নিচে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আরও কয়েকটি গ্রাম আছে। তবে এ গ্রামগুলো খুবই দুর্গম। কংলাক পাহাড়ের গোড়ায় নিঃস্বর্গের মাঝে আছে জলবুক কটেজ। সাজেকের অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য জুলবুকের ইকো কটেজগুলোর জুড়ি নেই।
কীভাবে যাবেন
প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি শহরে। ঢাকা থেকে সেন্টমসার্টিন পরিবহনের এসি বাস যায় খাগড়াছড়ি। ভাড়া ৯০০ টাকা।
এছাড়া সেন্টমার্টিন, শান্তি, শ্যামলী, সৌদিয়া ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসও চলে এ পথে। ভাড়া ৫২০ টাকা।
চট্টগ্রামের অক্সিজেন থেকে শান্তি পরিবহনের নন এসি বাস সরাসরি খাগড়াছড়ি যায়। ভাড়া ১৬০ টাকা।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার মূল বাহন জিপ। স্থানীয়রা একে বলেন চাঁদের গাড়ি। এ পথে যাওয়া আসার একটি চাঁদের গাড়ির ভাড়া ৮ থেকে ১১ হাজার টাকা। একটি গাড়িতে ১০ থেকে ১৫ জন চড়তে পারেন।
কোথায় থাকবেন
সাজেকে থাকার জন্য রুইলুই পাড়ার দুই প্রান্তে আছে সর্বাধুনিক ‘সাজেক রিসোর্ট’ আর ‘রুনময় রিসোর্ট’। দুটি রিসোর্টই সেনাবাহিনী পরিচালিত।
সাজেক রিসোর্টের কক্ষ ভাড়া সাধারণ পর্যটকদের জন্য ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু। রিসোর্ট দুটির বিস্তারিত তথ্য মিলবে এই ওয়েবসাইটে    



আজ এ পর্য‍ন্তই। ভালো থাকুন।ধন্যবাদ। 

পানছড়ির অরণ্য কুটির, খাগড়াছড়ি।


পানছড়ি,খাগড়াছড়ি। 






যেতে যেতে চোখে পড়বে অচেনা প্রাচীন বটবৃক্ষ। গাছের নিচে লাগোয়া দোকানে গরম চায়ে চুমুক দিয়ে আবার যাত্রা শুরু করতে পারেন।
পানছড়ির পুরোটা পথ পাহাড়ের ভিতর বয়ে চলা সমতল রেখার মতো। মায়াবী পথ, চারপাশে ঘন সবুজের আবরণ মাখা লালইটের রাস্তা। যদি গাড়ির ছাদে গিয়ে বসতে পারেন তবে অদ্ভুত দেখাবে সবুজ মাঠ পেরিয়ে অরণ্য কুটিরের প্রবেশ পথ। 




ধন্যবাদ সবাইকে।

শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

মধুচন্দ্রিমায় মধুর ভ্রমণ।



বিয়ের পর নবদম্পতিরা সামর্থ্য অনুযায়ী মধুচন্দ্রিমায় যান। নতুন জীবন সঙ্গীর সঙ্গে একান্ত কিছু সময় কাটানোর জন্য এর বিকল্প নেই। কাছে কিংবা দূরে, যেখানেই হোক না কেন জায়গাটা হওয়া উচিত সুন্দর, শান্ত, নিরিবিলি। বাংলাদেশে অনেক জায়গাই রয়েছে মধুচন্দ্রিমায় ভ্রমণের জন্য। তবে শুধু জায়গা হলেই চলবে না, সেখানে থাকার জায়গাটাও হতে হবে আকর্ষণীয়, মধুচন্দ্রিমার উপযোগী। 



কক্সবাজার

মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। তবে পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজারের সৈকত মধুচন্দ্রিমার জন্য হয়তো অনেক নবদম্পতির কাছেই পছন্দের হবে না। তাই মধুচন্দ্রিমায় কক্সবাজার গেলে আপনার জন্য আসল জায়গা হলো ইনানী কিংবা প্যাঁচার দ্বীপ। এখানকার মারমেইড ইকো রিসোর্টে মধুচন্দ্রিমা হয়ে থাকবে স্মরণীয়। একেবারে প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে দুজনকে একান্তভাবে সময় দেওয়ার জন্য কক্সবাজারের আকর্ষণীয় জায়গা এটি। মারমেইড ইকো রিসোর্টে দম্পতিদের জন্য দুই রাতের প্যাকেজ মূল্য ৬০০০ টাকা, তিন রাতের প্যাকেজ মূল্য ৮০০০ টাকা। সঙ্গে যুক্ত হবে ভ্যাট ও ট্যাক্স। প্যাকেজ মূল্যে অন্তর্ভুক্ত থাকা, তিন বেলার খাবার, কক্সবাজার শহর থেকে পরিবহন সুবিধা। যোগাযোগ :মারমেইড ইকো রিসোর্ট, ৩২, প্রগতি সরণী, চতুর্থ তলা, বারিধারা, ব্লক জে, ঢাকা ১২১২।  ফোন :০১৮৪১৪১৬৪৬৪



টেকনাফ

মধুচন্দ্রিমার জন্য আরেকটি আকর্ষণীয় জায়গা টেকনাফ সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতটি প্রকৃতি যেন মধুচন্দ্রিমার জন্যই তৈরি করেছেন। এত নির্জন, এত পরিচ্ছন্ন সমুদ্র সৈকত দেশে কমই আছে। এছাড়া এ সৈকতের কাছেই আছে সুন্দর থাকার জায়গা সেন্ট্রাল রিসোর্ট। এ রিসোর্টটি একেবারেই সমুদ্র লাগোয়া। খাবারও বেশ ভালো। এখানকার সুপিরিয়র রুমের ভাড়া ৬৩২৫ টাকা, স্যুইট রুম ৫৭৫০ টাকা, ডিলাক্স রুম ৪০২৫ টাকা এবং ডিলাক্স ইকনোমি রুম ২৮৭৫ টাকা। যোগাযোগ :সর্দার প্লাজা, ৫ম তলা, ৯৬, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণী, নর্থ সাউথ রোড, ঢাকা-১১০০। ফোন :০২-৭১৬৫৫২৮, ৯৫৫০৯১৪, ০১৭১১৫৩৪২০৫।



সেন্টমার্টিন

মধুচন্দ্রিমার আরেক আকর্ষণীয় গন্তব্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ। নির্জনে নতুন জীবনসঙ্গীকে একান্তভাবে সময় দেওয়ার জন্য এ দ্বীপটি আদর্শ জায়গা। সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে আছে সায়ারী ইকো রিসোর্ট। নব দম্পতিদের জন্য এ রিসোর্টের আছে বিশেষ প্যাকেজ। ঢাকা-সেন্টমার্টিন-ঢাকা, চার রাত তিন দিনের দুইজনের প্যাকেজ মূল্য ২৯০০০ টাকা। ঢাকা থেকে এসি বাসে টেকনাফ, সেখান থেকে জাহাজের আপর ডেকে স্টেমার্টিন, সয়ারী ইকো রিসোর্টের কটেজে অবস্থান, সব বেলার খাবার, বারবিকিউ ডিনার, ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, ছেড়া দ্বীপ ভ্রমণ এবং স্কুবা ডাইভিং প্যাকেজ মূল্যে অন্তর্ভুক্ত। যোগাযোগা :০১৮১২৩০৮০৬০। ঢাকা কার্যালয়, ট্রপিকানা টাওয়ার, (৮ম তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা।


সুন্দরবন

মধুচন্দ্রিমার জন্য আদর্শ একটি জায়গা সুন্দরবন। প্রকৃতির কাছে দুজন দুজনকে একান্ত করে পাওয়ার জন্য সুন্দরবনের বিকল্প নেই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় এ বনে মধুচন্দ্রিমায় যেতে হবে অভিজ্ঞ কোনো ভ্রমণসংস্থার সঙ্গে। বেসরকারি ভ্রমণসংস্থা বেঙ্গল ট্যুরস নিয়মিত প্যাকেজ ভ্রমণের আয়োজন করছে সুন্দরবনে। খুলনা-ঢাকা-খুলনা, তিন দিন দুই রাতের ভ্রমণ মূল্য জনপ্রতি ১১৫০০ টাকা। ভ্রমণ মূল্যে অন্তর্ভুক্ত বেঙ্গলের নিজস্ব জাহাজে থাকা, খাওয়া, জঙ্গলে প্রবেশের রাজস্ব, গাইড ইত্যাদি। যোগাযোগ :বাড়ি-৪৫, রোড-২৭, ব্লক-এ, বনানী, ঢাকা। ফোন :০২-৯৮৫৭৪২৪, ০১৭৭৫১০৫৩৫১।



শ্রীমঙ্গল

চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলও মধুচন্দ্রিমার জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। এখানকার চা বাগান ছাড়াও মধুচন্দ্রিমার ফাঁকে ঘুরে বেড়াতে পারেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক প্রভৃতি জায়গায়। শ্রীমঙ্গলে প্রতিষ্ঠিত আধুনিক রিসোর্ট গ্র্যান্ড সুলতান নব দম্পতিদের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রেখেছে। এ রিসোর্টের প্যাকেজ মূল্য এক রাত ১৫,০০০ টাকা, দুই রাত ২৫,০০০ টাকা, তিন রাত ৩৫,০০০ টাকা। পরবর্তী প্রতি রাত ১০৫০০ টাকা। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ প্যাকেজে মূল্য প্রযোজ্য। প্যাকেজ মূল্যে অন্তর্ভুক্ত সকালের খাবার, একটি ক্যান্ডেল লাইট ডিনার ইত্যাদি। যোগাযোগ :বাড়ি-১০৮, অ্যাপার্টমেন্ট এ-২, সড়ক-৮, ব্লক-সি, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন :০২-৯৮৫৮৮২৭, ০১৭৩০৭৯৩৫৫২-৭।

এছাড়া মধুচন্দ্রিমায় শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জে বেড়াতে যেতে পারেন সুইজ ভ্যালি রিসোর্টে। প্রকৃতির মাঝে সুন্দর সাজানো এ রিসোর্টটিতে সময় কাটাতে ভালো লাগবে। শমশেরনগর বিমানবন্দরের পাশে অবস্থিত এ রিসোর্টে আছে বেশ কয়েকটি আধুনিক কটেজ। এ রিসোর্টের কটেজগুলোতে ২০০০-৪০০০ টাকায় নানারকম কক্ষ আছে। এছাড়া ভালো মানের খাবারও মিলবে এ রিসোর্টে। যোগাযোগ :সুইস ভ্যালি রিসোর্ট, শমশেরনগর, মৌলভীবাজার। ফোন :০১৭৮৬৪৯৩৭০০।

এছাড়া ভানুগাছ সড়কে আরও আছে টি রিসোর্ট (০৮৬২৬-৭১২০৭, ০১৭১২৯১৬০০১)। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাশে আছে লেমন গার্ডেন রিসোর্ট। (০১৭৬৩৪৪৪০০০, ০১৭৫৮৭৭১৪৯২)। শ্রীমঙ্গলের রাধানগরে দুটি রিসোর্ট হল নিসর্গ নিরব ইকো রিসোর্ট (০১৭১৫০৪১২০৭) এবং নিসর্গ লিচিবাড়ি ইকো রির্সোট (০১৭১৬৯৩৯৫৪০)।   





ধন্যবাদ সবাইকে। 

ফয়’স লেকে ভ্রমণ।






বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার খুলশীতে মনোরম একটি পর্যটন কেন্দ্র ঐতিহাসিক ফয়’স লেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিনশ ফুট উঁচু এ হ্রদে সারা বছরই পানি থাকে। ছোট ছোট পাহাড়ের বাঁকে বিস্তৃত এই পর্যটন কেন্দ্রটি প্রকৃতির মাঝে যেন একখণ্ড স্বর্গ রচনা করেছে। চট্টগ্রাম শহরের পানি সমস্যার সমাধানে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯২৪ সালে প্রায় ৩৩৬ একর জায়গায় কৃত্রিম এ হ্রদটি খনন করেছিল। দীর্ঘ সময় অযত্নে পড়ে থাকায় একসময় জৌলুশ হারাতে বসে প্রাচীন এই লেক। তবে এটি আবার প্রাণ ফিরে পায় ২০০৫ সালে। ফয়’স লেকের প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সে বছর কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি সেখানে গড়ে তোলে আধুনিক এমিউজমেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট।

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর খুলশী এলাকার প্রধান সড়কের পাশে ফয়’স লেকের তোরণ। সেখান থেকে কিছুটা ভিতরে এর মূল প্রবেশ পথ। শুরুতেই ফয়’স লেকের এমিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড। বেশ কিছু আধুনিক রাইড আছে এখানে। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড আছে এখানে। এখান থেকে উপরে টিলায় আছে বনভোজন কেন্দ্র। সেখান থেকে আরেকটি টিলার উপরে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। চট্টগ্রাম শহরের বার্ডস আই ভিউ দেখা যায় জায়গাটি থেকে।

অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ডের উত্তরে টিলার ওপরে মূল ফয়’স লেক। লেকের দু পাশে সবুজে ঘেরা উঁচু উঁচু পাহাড়। পাহাড়গুলোর নাম রাখা হয়েছে আসমানী, গগনদ্বীপ, জলটুঙ্গি ইত্যাদি। এসব পাহাড়ে আছে সংরক্ষিত বন, সে বনে খেলা করে চিত্রা হরিণ, খরগোশসহ আরও কিছু বন্যপ্রাণী। ফয়’স লেকে ভ্রমণেরও ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন আকারের ইঞ্জিন চালিত নৌকা, স্পিড বোট আর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পানও আছে লেকে।

ফয়’স লেকের ভিন্ন এক জগত্ সি ওয়ার্ল্ড। লেকের শেষপ্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে পানির রাজ্যে রোমাঞ্চকর জায়গা। শহরের সিটি গেট সংলগ্ন সড়ক দিয়ে গেলে সরাসরি প্রবেশ করা যাবে সি-ওয়ার্ল্ডে। তবে মূল প্রবেশ পথে গেলে নৌকায় চড়ে পৌঁছুতে হয় সি-ওয়ার্ল্ডে। আধুনিক ওয়াটার পার্কের বিভিন্ন রাইড আছে জায়গাটিতে।

প্রকৃতির মাঝে নির্জনতায় অবকাশ যাপনের জন্য ফয়’স লেকে আছে বেশ কিছু রিসোর্ট। সি-ওয়ার্ল্ডের পাশেই এর অবস্থান। রিসোর্টেও যেতে হয় নৌকায় চড়ে। নির্জনতায় সময় কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা এসব রিসোর্ট। লেক ও পাহাড়মুখী দু ধরনের ঘরই আছে এখানকার রিসোর্টে। বারান্দায় বসে লেক আর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের ব্যবস্থা আছে এখানে। মধুচন্দ্রিমার জন্যও এখানকার রিসোর্ট আকর্ষণীয় জায়গা।

খরচপাতি

ফয়’স লেকের অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ডের বিপণন বিভাগের সহযোগী ব্যবস্থাপক বিশ্বজিত্ ঘোষ জানান, সাধারণ প্রবেশমূল্য ২৫০ টাকা। ৩ ফুটের চেয়ে কম উচ্চতার শিশুদের প্রবেশ মূল্য লাগে না। এখানকার বিভিন্ন রাইডে চড়ার আলাদা আলাদা মূল্য রয়েছে। তবে প্রবেশ ও সব রাইডের বিশেষ প্যাকেজও আছে। বনভোজন দলের জন্য খাবারের আয়োজনসহ বিশেষ মূল্যও আছে ফয়’স লেকে। ফয়’স লেকের রিসোর্টের কক্ষ ভাড়া ৪৯৩৫-১০৫০৮ টাকা, এছাড়া বাংলোর কক্ষ ভাড়া ৫৫৬৩ টাকা ৯৮৯০ টাকা। যোগাযোগ :০৩১-২৫৬৬০৮০।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে যেতে পারেন চট্টগ্রাম শহরে। ঢাকার বাসগুলো সাধারণত শহরে প্রবেশ করে ফয়’স লেকের সামনের সড়ক থেকেই। এছাড়া শহরের যেকোনো জায়গা থেকে খুব সহজেই ফয়’স লেক আসা যায়। ঢাকা থেকে সড়কপথে টি আর ট্র্যাভেলস, দেশ ট্র্যাভেলস, গ্রিনলাইন পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজের এসি বাস যায় চট্টগ্রামে। ভাড়া ৯৫০-১২৫০ টাকা। এছাড়া এস আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, শ্যামলী, হানিফ, ঈগল প্রভৃতি পরিবহনের সাধারণ মানের নন-এসি বাসও চলে এ পথে। ভাড়া ৪৫০-৫০০ টাকা। চট্টগ্রামের উদ্দেশে মহানগর প্রভাতী ঢাকা ছাড়ে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল ৯টা বিশ মিনিটে, মহানগর গোধূলি ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৩টায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে, তূর্ণা ছাড়ে রাত এগারোটায়। শ্রেণিভেদে ভাড়া ১৩৫-১০৯৩ টাকা। এছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, নভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার ও ইউনাইটেড এয়ারের বিমান যায় চট্টগ্রামে।    



ভ্রমণ করে আসুন ফয়'স লেকে, ভালো লাগবে আশা করি। ধন্যবাদ।