শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫

রঙে ঢঙে রাঙ্গামাটি ।

রঙে ঢঙে রাঙ্গামাটি ।   

‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু।’ 

সেই সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে হলে কর্মব্যস্ততা দূরে সরিয়ে রেখে মাঝেমধ্যে দু-চার দিনের জন্য বেড়িয়ে পরার বিকল্প নেই। যদি তাই হয়, তাহলে গন্তব্যের তালিকায় প্রথমে রাঙ্গামাটি থাকলে আপনি ঠকবেন না- এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এ দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অনন্য দান। সুতরাং ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা...’ মনে মনে গাইতে গাইতে এই ঈদের ছুটিতে চলে যান রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য সুধা পান করতে। তার আগে জেনে নেয়া যাক রাঙ্গামাটি ভ্রমণ সহায়ক দু-চারটি কথা। এবং চোখ বুলিয়ে নিন সেই সমস্ত জায়গাগুলোর উপর, আপনি যেসব অবশ্যই দেখবেন।  
কাপ্তাই লেক : সত্য কথা বলতে কি, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের সম্পূর্ণটাই সৌন্দর্যে ভরপুর। সমস্ত এলাকা তন্ন তন্ন করে চষে বেড়ালেও আপনার মুগ্ধতা শেষ হবে না। উল্টো আপনার কৌতূহল বাড়তেই থাকবে। প্রকৃতি এত সুন্দর! তবে কাপ্তাই লেককে প্রাকৃতিক বললে ভুল হয়ে যাবে। বৃটিশ আমলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে কর্ণফুলী নদীর গতি মুখ ঘুরিয়ে দেয়া হয়। ফলে পাহাড়ের ফাঁক ফোঁকড়ের সমতল আবাদি জমিগুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে বিশাল এক সরোবরে পরিণত হয়। এটি কাপ্তাই লেক বলে পরিচিত। 

লেকের নীল জল যে কারও হৃদয় শীতল করে দেয়। সম্পূর্ণ লেকটিকে আবৃত করে রেখেছে পর্বত শ্রেণি। এই লেকের জলে নৌকায় ভেসে বেড়ানো যে কারোর জন্য স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। আপনিও ভেসে বেড়ান, উপভোগ করুন জল-পর্বতের ব্যাঞ্জনায় অপরূপ সৌন্দর্য। রাঙ্গামাটি শহর এবং কাপ্তাই পর্যটন স্পট সংযুক্ত হয়েছে চমৎকার একটি সড়কের মাধ্যমে। যেতে যেতে সড়কটি প্রবেশ করেছে পার্বত্য এলাকার গভীরে।

শুভলং ঝরনা : জেলার সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর মধ্যে শুভলং ঝরনা একটি। প্রায় সকলেই রাঙ্গামাটি ভ্রমণে এলে সবার আগে শুভলং দেখতে যান। এই ঝরনা দেখতে সর্বক্ষণ পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে ঝরনাটি পতিত হয়েছে কাপ্তাই লেকে। শুভলং-এর নিকটে যেতে বাধা নেই, ফলে ঝরনার রূপ মাধুর্য প্রাণ ভরে উপভোগ করতে বাধা নেই। সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌকা। শহরের রিজার্ভ বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শুভলং যাতায়াতের জন্য ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, স্পিডবোট ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া গুণতে হবে।

শুভলং বাজার : গ্রামীণ বাজার মানেই আলাদা দর্শণীয় জায়গা। বাংলাদেশ যেহেতু গ্রামপ্রধান, তাই বর্ণিল বাজারগুলো এখানকার শোভা। শুভলং বাজারের অবস্থান পার্বত্য এলাকায়। সুতরাং, এখানকার সাজশয্যা অন্য বাজারের থেকে খানিক ভিন্ন। বাজারের পণ্য সামগ্রীও ভিন্ন। যেমন বিন্নিচাল, তিতগুলা, তিতবেগুন, বাঁশপ্রোল, গোমাইত্যা, শিমে আলু, তারা ডাটা প্রভৃতি। এগুলো স্থানীয়দের নিত্যদিনের খাবার। অথচ দেখুন এ সবের নামই আমরা শুনিনি। রাঙ্গামাটির রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় নানা ধরনের পাহাড়ি খাবার। পাওয়া যায় তাদের হাতে বোনা ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গামছা, গায়ের চাদর, কম্বল ইত্যাদি। আপনার পছন্দেরটি চাইলে সেখান থেকেই কিনতে পারবেন। বাজারে যেতে হলে শুভলং ঝরনার পথেই যেতে হয়। 
রাজবন বিহার : দেশের সর্ববৃহৎ এই জেলার বেশ কয়েকটি নিদর্শনের মধ্যে রাজবন বৌদ্ধ বিহার একটি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিকট এটি পবিত্র স্থান। আধ্যাত্মিক মন্দির বলেও এর পরিচিতি বা নাম রয়েছে। মন্দিরের দৃষ্টিনন্দন গঠনের জন্য সাধারণ পর্যটকের নিকটও এটি আকর্ষণীয় জায়গা। 

কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক : জাতীয় এই উদ্যানের অবস্থান কর্ণফুলী নদী ও কাপ্তাই মাউন্টেইন রেঞ্জের মাঝামাঝি। ৫,৪৬৪.৭৮ হেক্টর এলাকা নিয়ে ১৯৯৯ সালে এর প্রতিষ্ঠা। উদ্যান ঘোষণার আগে শিতা পাহাড় সংরক্ষিত বনাঞ্চল বলে পরিচিত ছিল। এই উদ্যানে রয়েছে বহু পুরনো বৃক্ষ, যেগুলি ১৮৭৩ সালে রোপণ করা হয়েছিল। যে কেউ এই বনের প্রেমে পড়ে যেতে পারেন। বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে হরিণ, বনবিড়াল, হাতি, বানর এবং অন্যান্য প্রাণী। বিলুপ্তপ্রায় বেশ কয়েক প্রকার পাখিও রয়েছে। আর অন্যান্য পাখি তো আছেই তাই পাখি প্রেমীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা বটে। বর্তমানে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান বন্যপশু ও পাখিদের জন্য এক অভয়ারণ্য। এখানে বন বিভাগ নির্মাণ করেছে পিকনিক স্পট ও রেস্তোরাঁ। পাহাড়ি বন্য পরিবেশে নিরিবিলি রেস্তোরাঁয় পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে খাওয়াও এক দারুণ অভিজ্ঞতা। 
ঝুলন্ত সেতু : দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতির পেছনে এখন পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পরেই যার স্থান তা হলো রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। দৃষ্টিনন্দন সেতুটি কাপ্তাই লেকেরই বিশেষ এক অংশে স্থাপিত। সেতুকে কেন্দ্র করে এখানে রয়েছে একাধিক ক্যাটাগরির বোটিং সেবার আয়োজন। এখন বর্ষা চলমান, সুতরাং লেক এবং তার চারপাশের প্রকৃতিতে লেগেছে যৌবনের ছোঁয়া। পানিতে টইটুম্বুর লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু আর তার এপার থেকে ওপারের দিকে আপনি পায়ে হেঁটে এগিয়ে হচ্ছেন, ভেবে দেখু কেমন হতে পারে সে অনুভূতি!

প্যাদা টিং টিং : কাপ্তাই লেকের একটি অংশের মাঝখানে দ্বীপের মত জায়গাটিতে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে, নাম প্যাদা টিং টিং। সেখানে মোটামুটি স্বল্প খরচে পাহাড়ি খাবারের হরেক পদ থেকে বেছে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের খাবার। মন্ডি, নুডুল মন্ডি, চিকেন চাটনি ইত্যাদি এখানকার জনপ্রিয় পদ। বিশেষ করে সেখানে গিয়ে কলাপাতা ও বাঁশের চোঙার মধ্যে রান্না করা মুরগির মাংস অথবা মাছ খেতে ভুলবেন না।

টুর অপারেটরদের প্যাকেজ :
লেজার টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস : ৩ দিন ২ রাতের পাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৭৫০ টাকা। প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত ঢাকা-রাঙ্গামাটি-ঢাকা বাস সার্ভিস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেলে থাকার ব্যবস্থা, দৈনিক সকালের নাস্তা, সাইটসিং এবং অভিজ্ঞ গাইড সুবিধা। ফোন : ০১৭১৪৫৫৫৫৫৫, ৯৯৩৪৮১৭৯
গ্রীন বাংলাদেশ টুরস : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজ মূল্য ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০২-৮৬৫২২৫৪, ০১৮১৯-৪৮০৫৪০
ক্যাপ্টেইন হলিডেজ : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০১৯৭৭০৫৮৪৫২

যদি নিজ ব্যবস্থাপনায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে চান সে জন্য আপনার সুবিধার্থে দিয়ে দেয়া হলো বাস কাউন্টার ও হোটেল, রিসোর্ট এবং মোটেলের কিছু তথ্য:  
হোটেল সুফিয়া ইন্টারন্যাশনাল, কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬২১৪৫, ০১৭১৫-২৫১৮৪৬। ঢাকা রিজার্ভেশন কার্যালয়, ফোন : ০২-৮৮২৬৭৫৯, ০১৮১৯-২২৪৫৯৩
পর্যটন হলিডে কমেপ্লেক্স (পর্যটন মোটেল), ডিয়ার পার্ক, তবলছরি, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬৩১২৬, ৬১০৪৬

ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস ঢাকা-রাঙ্গামাটি রুটে চলাচল করে। 
শ্যামলী পরিবহন, ঢাকা কলাবাগান কাউন্টার : ০২-৯১৪১০৪৭, ০১৭১১-১৩০৮৬২। কাপ্তাই কাউন্টার: ০১৮১৩-৯৬৯৭১৯। 
সৌদিয়া, ঢাকা ফকিরাপুল কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৫৮, কলাবাগান কাউন্টার: ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭, রাঙ্গামাটি কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭।     


অবসর সময়ে বেড়িয়ে আসুন,একঘেয়েমি দূর হবে আর কাজে পাবেন পূর্ণ‍্ উদ্যোম। ধন্যবাদ সবাইকে।

বাংলার দিঘি বাংলার পানি।

বাংলার দিঘি বাংলার পানিবাগ। 

রামসাগর দিঘি ।

 ধর্মসাগর দিঘি  

প্রাচীন ত্রিপুরার মহারাজা ধর্মমাণিক্য ধর্মসাগর দিঘি খনন করেন। দেশের প্রাচীন এই দিঘির আয়তন প্রায় ৯.৩৮১ হেক্টর। স্বচ্ছ চকচকে পরিস্কার পানির এই দিঘির চারপাশ পাকা করা। দিঘির জলে ছোট ছোট ঢেউয়ের ওপর সূর্যের আলো নেচে বেড়ায়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন ছোট ছোট প্রদীপ ভাসছে। দিঘিটি যে কারও নজর কাড়বে। শুরুতে দিঘির মাঝখানে একটি মাটির ঢিবি ছিল। যদিও এর কারণ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। দিঘির পূর্ব পাড়ে কুমিল্লা স্টেডিয়াম। উত্তরে রয়েছে কুমিল্লা পৌরপার্ক। পার্কের বিভিন্ন জায়গায় সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বসার জায়গা। ফলে পর্যটকেরা চাইলে সেখানে বসে বিশ্রাম করতে পারবেন। এ ছাড়া যে কেউ চাইলে দিঘিতে রাখা নৌকায় ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এ জন্য ঘণ্টাপ্রতি গুণতে হবে প্রায় একশ টাকা। দিঘির স্বচ্ছ পানিতে ভেসে ভেসে পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে মন্দ লাগবে না। শীতকালে এই দিঘির চারপাশে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। 


যাবেন যেভাবে : ধর্মসাগর দিঘির অবস্থান কুমিল্লা জেলা শহরে। ঢাকা থেকে বাসে কিংবা ট্রেনে কুমিল্লা যাওয়া যায়। কুমিল্লা বাস টার্মিনাল থেকে দিঘিতে যেতে সময় লাগে প্রায় ১৫ মিনিট। ভালো কথা, কুমিল্লা গিয়ে খদ্দরের কাপড় না কিনলে পরে পস্তাতে হবে। আপনার সে আশাও  মিটবে এই ধর্মসাগর দিঘির পাড়েই। কারণ সেখানে কয়েকটি দোকান রয়েছে।

গঙ্গাসাগর দিঘি

কয়েকশ বছর আগের ঘটনা। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা ঈশ্বরচন্দ্র মানিক বাহাদুর কুমিল্লায় কর আদায় করতে আসতেন। তখন এ অঞ্চলে এবং এর আশপাশে পানির সুব্যবস্থা ছিল না। এলাকায় পানির অভাব দেখে রাজা চিন্তিত হন। তখন তিনি দিঘি খনন করার কথা ভাবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। খনন করা হলো বিশাল দিঘি। শুধু টলটলে পানির দিঘি নয়, এর উত্তর পাশে রাজা একটি সান বাঁধানো ঘাটও তৈরি করে দিলেন। এর নাম রাখা হলো ‘গঙ্গাসাগরের ঘাট’। রাজা সময় পেলেই ঘাটে এসে বসতেন। শীতল হাওয়া রাজার বিক্ষিপ্ত মনকে শ্রান্ত করত। রাজা দিঘির নাম রাখলেন দেবী গঙ্গার নামানুসারে। দিঘির পাশে রাজা কর আদায়ের জন্য তফসিল কাচারি তৈরি করেছিলেন। যদিও এখন সেই কাচারিঘর নেই। এক সময় এই দিঘির পাশেই ছিল ত্রিপুরা ব্যাংক। এখন সেটিও নেই। 

গঙ্গাসাগর দিঘি সর্বমোট ১৮ ধুন জায়গা নিয়ে বিস্তৃত। হিসাব মতে ৩০ শতাংশে এক কানি। ১৬ কানিতে ১ ধুন। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে গঙ্গাসাগর দিঘি এখনও রয়েছে আপন মহিমায়। দিঘির পাশেই শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তাফা কামালের সমাধি। ফলে দিঘির স্বচ্ছ টলমলে পানি দেখার পাশাপাশি বীরশ্রেষ্ঠের মাজার ভ্রমণও ইতিহাসপিপাসুদের আগ্রহী করবে।

পাঠককে এই অবসরে জানিয়ে রাখি, রাজধানী ঢাকায়ও এই নামে একটি দিঘি রয়েছে। হ্যাঁ, চমকে ওঠার মতোই ব্যাপার বটে! যেখানে খাল-বিল-জলাশয় নেই, পুকুরগুলোও মৃতপ্রায়, সবেধন নীলমণি বুড়িগঙ্গা টিকে আছে কোনোমতে, সেখানে আস্ত একটা দিঘি! রাজধানীর এই দিঘির অবস্থান সবুজবাগ থানাধীন পশ্চিম রাজারবাগ এলাকায়। দিল্লির সম্রাট আকবর প্রধান সেনাপতি মানসিংকে ষোড়শ শতকের শেষ দিকে বাংলায় পাঠিয়েছিলেন। তখন এ অঞ্চলে বারো ভূঁইয়াদের রাজত্ব। তাদের শায়েস্তা করতেই তাকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি এ দিঘি খনন করেন।

যাবেন যেভাবে : কমলাপুর থেকে ট্রেনে আসতে হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া। সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। রেলস্টেশন থেকে দিঘি ১৫ মিনিটের পথ। অটোরিকশা বা রিকশা দিয়ে যাওয়া যাবে। পাঠককে জানিয়ে রাখি ঢাকা থেকে বাসে গেলে চলতি পথেই বাসের জানালা দিয়ে আশুগঞ্জ সার কারখানা দেখতে পাবেন।

দুর্গাসাগর দিঘি

রানী দুর্গাবতী ছিলেন রাজা শিব নারায়ণের স্ত্রী। রাজার মৃত্যুর পর রানী নিজেই রাজ্য পরিচালনার ভার নেন। প্রজাহিতৈষী হিসেবে রাজমাতা দুর্গাবতীর পরিচিতি ছিল। প্রজাদের সুবিধার্থে ১৮৭০ সালে তিনি রাজকোষ থেকে ৩ লাখ টাকা ব্যয় করে  একটি দিঘি খনন করেন। তার নামানুসারে দিঘির নামকরণ করা হয়। জনশ্রুতি আছে, পেছন ফিরে না তাকানোর প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী রাজমাতা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যতদূর হেঁটে যেতে পারবেন ততদূর পর্যন্ত তিনি দিঘি খনন করার ঘোষণা দেন। ৬১ কানি জমি অতিক্রম করার পর ঘোড়ার ডাকের শব্দে, আবার অনেকে বলেন রাজ কর্মচারীদের ঢাক বাজানোর শব্দে রানী দুর্গাবতী পেছন ফিরে তাকান। পরবর্তীতে সেই স্থানজুড়ে তিনি দিঘি খনন করেন। 

সরকারি হিসাব অনুযায়ী দিঘিটি ৪৫ একর ৪২ শতাংশ জমিতে অবস্থিত। কালের বিবর্তন ধারায় দিঘিটি এখনও টিকে আছে। শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে এখানে নানা প্রজাতির পাখি আসে। তারা সাঁতার কাটে দিঘির স্বচ্ছ, স্ফটিক পানিতে। ১৯৭৪ সালে দিঘিটি সংস্কার করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দিঘির মাঝামাঝি অবকাশ যাপন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য  মাটির ঢিবি তৈরি করা হয়। দিঘির চারপাশে নারিকেল, সুপারি, শিশু, মেহগনি প্রভৃতি বৃক্ষরোপণ করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। দিঘির চার পাশে চারটি সুদৃশ্য বাঁধানো ঘাট থাকলেও পূর্ব-দক্ষিণ  পাশের ঘাট দুটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। পশ্চিম পাড়ে ঘাটসংলগ্ন স্থানে রয়েছে জেলা পরিষদের ডাক বাংলো। ইচ্ছা করলে ভ্রমণপিপাসুরা সেখানে রাত কাটাতে পারবেন।

অভয়ারণ্য হিসেবে দিঘির পাশে গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ পার্ক। দিঘির পাশ দিয়ে বনবিভাগের তদারকিতে গড়ে তোলা হয়েছে বৃক্ষের বাগান। দুর্গাসাগর দিঘিতে প্রতি বছর চৈত্র মাসে পূণ্যের উদ্দেশে জড়ো হন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। চৈত্র তিথিতে হয় স্নান উৎসব।

যাবেন যেভাবে : ঢাকা থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরপর বরিশালের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। আপনি চাইলে সদরঘাট থেকে লঞ্চেও যেতে পারেন। বরিশাল জেলা শহর থেকে মাত্র ১২ কি.মি. দূরে মধাবপাশা ইউনিয়ন। এখানেই দূর্গাসাগর দিঘির অবস্থান।

কমলা রানীর সাগরদিঘি

পল্লীকবি জসিমউদদীন এই দিঘি দেখতে এসে পাড়ে বসে লিখেছিলেন :
‘কমলা রানীর দীঘি ছিল এইখানে, ছোট ঢেউগুলি গলাগলি ধরি ছুটিত তাদের পানে।
আধেক কলসী জলেতে ডুবায়ে পল্লী বধূর দল, কমলা রানীর কাহিনী স্মরিতে আঁখি হত ছল ছল।’

রাজা পদ্মনাথের আমলে আনুমানিক ষোলোশ খ্রিস্টাব্দে ১৭৫ একর জায়গা নিয়ে এই দিঘি খনন করা হয়। কবির কাব্যের মতোই এই দিঘি নিয়ে নানা লোককথা শোনা যায়। যেমন কেউ বলেন, রাজা পদ্মনাথ সিংহের স্ত্রী ছিলেন কমলাবতী। তিনি রূপবতী এবং গুণবতী। রাজপুত্রের জন্মের পর হঠাৎ রাজ্যে দেখা দেয় পানির অভাব। রাজা পদ্মনাথ প্রজার দুর্দশা লাঘবে দিঘি খননের আদেশ দেন। কিন্তু দিঘি খনন শেষে দেখা গেল পানি উঠছে না। এতে রাজা চিন্তিত হন। প্রজারা ধরে নেয় রাজপুত্রের জন্মের সঙ্গে নিশ্চয়ই দিঘির পানি না ওঠার সম্পর্ক আছে। এর মধ্যে রাজা পুনরায় স্বপ্ন দেখেন দিঘিতে কমলাবতী আত্মদান করলেই পানি উঠবে।

রাজা এ স্বপ্ন না মানলেও রানী কমলাবতী পুত্র ও প্রজাদের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেন তিনি আত্মাহুতি দেবেন। সে মোতাবেক সত্যি সত্যি একদিন তিনি দিঘিতে নামেন। সবাইকে অবাক করে তখন দেখা যায় রানী যত সামনে অগ্রসর হন দিঘির পানি ততো বাড়ে। এভাবে ধীরে ধীরে এক সময় রানী পানির নিচে তলিয়ে যান। শোনা যায়, সেই থেকে সাগরদিঘি কখনও আর শুকায়নি। এ ঘটনার পর সাগরদিঘির আরেক নাম হয় ‘কমলারানীর দিঘি’।

লোকের মুখে মুখে এ ধরনের গল্প উচ্চারিত হয়ে আসছে যুগে যুগে। বিশাল এ দিঘি দেখলে সাগরের মতো মনে হয়। তাই এটি ‘কমলারানীর সাগরদিঘি’ নামেও পরিচিত। লম্বালম্বি এই দিঘির এপাড় থেকে ওপাড়ের লোকজন দেখা দুষ্কর। দিঘির চারপাশে সারিবদ্ধ গাছ দিঘির রূপ যেন আরো মোহনীয় করে তুলেছে।

যাবেন যেভাবে : হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে এই দিঘির অবস্থান। হবিগঞ্জ শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১৬ কি.মি.। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে সরাসরি হবিগঞ্জ যাওয়া যায়। সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা। আরেকটি তথ্য, এই বানিয়াচং কিন্তু আমাদের দেশেরই শুধু নয়, এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম। সুতরাং সেখানে গেলে পুরো গ্রামটি ঘুরে দেখতে ভুলবেন না।

নীলসাগর দিঘি

বহু আগে এর নাম ছিল ‘বিরাট দিঘি’ বা ‘বিরনা দিঘি’। সেখান থেকে নামটি আরো সংক্ষিপ্ত হয়ে ‘বিন্না দিঘি’। এই নামের পেছনেও রয়েছে ইতিহাস। ঐতিহাসিকদের মতে, বিরাট নামক এক রাজা এই দিঘি খনন করেছিলেন। যারা ‘মহাভারত’ পড়েছেন তারা এই রাজার নাম শুনে থাকবেন। পঞ্চপান্ডব কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হয়। পান্ডবরা তখন অজ্ঞাতবাসের জন্য বিরাট রাজার রাজ্যে এই স্থানটিতে ছদ্মবেশে বাস করতে থাকে। পান্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতেই রাজা বিরাট এই দিঘি খনন করেন।

আবার অনেকে বলেন,  রাজা বিরাটের সময় রাজ্যে অসংখ্য গরুর আস্তানা ছিল। গরুগুলোকে পানি খাওয়ানোর জন্য অষ্টম শতাব্দীতে তিনি এই দিঘি খনন করেন। স্বাধীনতার পর এ দিঘির নামকরণ করা হয় ‘নীলসাগর’। নীলসাগর দিঘিতে প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সনাতন সম্প্রদায় বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে দিঘির পাশেই সরকারের অনুদানে নির্মিত একটি রেস্টহাউস এবং ছোট একটি পার্ক রয়েছে।

যাবেন যেভাবে : নীলফামারী জেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নে নীলসাগর দিঘির অবস্থান। ঢাকা থেকে ট্রেন এবং বাসযোগে নীলফামারী যাওয়া যায়। নীলফামারী থেকে গোড়গ্রামের দূরত্ব ১৪ কি.মি.। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই মূলত নীলসাগর বিখ্যাত।

রামসাগর দিঘি

নামে সাগর হলেও এটি আসলে একটি দিঘি। দেশের অন্যান্য আর সব দিঘির মতোই এটিও তৈরি করেছিলেন রাজন্য বর্গের মানুষেরা। রাজা রামনাথ এই দিঘি খনন করেন প্রজাদের সেচ সুবিধা ও পানির সমস্যা দূরীকরণের জন্য। এই দিঘি এত বড় যে, পায়ে হেঁটে দিঘির চারপাশে একবার ঘুরে আসা প্রায় অসম্ভব। যে কারণে দিঘির পাশ ঘেঁষে ইটের রাস্তা রয়েছে। দিঘির চারপাশে হাজার ধরনের গাছ রয়েছে। নাম না জানা পাখির কলরব আপনাকে মুগ্ধ করবে। আপনি চাইলে দিঘির পাড়ে বসে একটু জিড়িয়ে নিতে পারেন। দিঘির জল ছুঁয়ে আসা শীতল হাওয়া আপনার মন জুড়িয়ে দেবে। 


ইতিহাস বলছে, দিঘিটি খনন করতে তৎকালীন প্রায় ৩০ হাজার টাকা এবং ১৫ হাজার শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল। এর চারদিকে সবুজ প্রান্তর। পাড়ভূমিসহ দিঘির মোট আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার। জলভাগের দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার, প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ৯ মিটার। দিনাজপুর এমনিতেই দর্শণীয় স্থান। সেখানে কান্তজির মন্দির রয়েছে। সুতরাং দিনাজপুর গেলে একসঙ্গে অনেক কিছুই দেখা হয়ে যাবে। ভালো কথা, লিচুর সময় অর্থাৎ জৈষ্ঠ্য মাসে গেলে দিনাজপুরের লিচুর স্বাদও নিতে পারবেন। 

যাবেন যেভাবে : দিনাজপুর শহরের কেন্দ্র থেকে ৮ কি.মি.  দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে এই দিঘির অবস্থান। ঢাকা থেকে দিনাজপুরে বাস এবং ট্রেনে দু’ভাবেই যাওয়া যায়। 

                                           ==============


ধন্যবাদ। আজ এ পর্য‍ন্তই। ভালো থাকবেন সবাই আর সময় করে ঘুরে আসুন বাংলাদেশের পানির বাগান। 


মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫

বেড়ানোর প্রস্তুতি ।


ঈদের পরপর কয়েকটি দিনের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারলে মন্দ হয় না। অনেকে হয়ত বেড়াতে যাবেন। দেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে খরচ কম লাগবে। সময়ও বেশি লাগবে না। নগরসভ্যতার বোতাম টিপলে যেমন কাজ হয়ে যায়, তেমনি ভ্রমণের আকাক্সক্ষা খুব সহজেই পূরণ করা যায়। শুধু একটু সময় ও পরিকল্পনার প্রয়োজন। তড়িঘড়ি করে বেড়াতে গিয়ে দেখা যায় অনেক কিছুই ভুলে যাই আমরা। তা ছাড়া এখন আবহাওয়ায় গরম ও বৃষ্টি দুটোরই আধিক্য দেখা যাবে। তাই বেড়াতে বের হওয়ার আগে প্রস্তুতি নিতে পারলে আপনারই সুবিধা হবে।
ভ্রমণে যাওয়ার আগের প্রস্তুতি
- কোথায় ভ্রমণে যাচ্ছেন, সেই জায়গার আবহাওয়া, পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিন। থাকা-খাওয়া, যাতায়াতের ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখার ব্যবস্থা করে নিন।
- যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানকার জরুরি ফোন নাম্বার এবং লোকেশন সম্পর্কে তথ্য আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখুন। যেমন- নিকটস্থ থানা (পুলিশ), হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, আবাসিক হোটেল, ব্যাংক ইত্যাদি।
- যে স্থানে ভ্রমণে যাচ্ছেন, প্রয়োজনে সেখানে গাইডের সাহায্য নিন। ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভ্রমণের সব ব্যবস্থা করলে, আগে আগেই সব খোঁজখবর নিন।
- বৃদ্ধ, শিশু কিংবা রোগাক্রান্ত (ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনিজনিত সমস্যা, হাঁপানি) রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভ্রমণের আগে মেডিক্যাল চেকআপ করিয়ে নিন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ব্যাগ প্যাকিং
- ব্যাগ (ট্রাভেল ব্যাগ) মার্কেটে এখন নানা ধরনের কিনতে পাওয়া যায়। আপনার পছন্দ এবং প্রয়োজন অনুসারে ব্যাগ নির্বাচন করুন।
- প্রয়োজনীয় জামাকাপড়, জুতা, কসমেটিকস আলাদা করে প্যাক করুন, যাতে স্থান সঙ্কুলান হয় আবার জিনিসপত্র এলোমেলো হবে না।
- শিশুদের পোশাক, জুতা আলাদা ব্যাগে নিতে পারেন।
- প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, জ্বর, প্রেসার ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র, ইনহেলার অবশ্যই ব্যাগে রাখুন। ফার্স্ট এইড বক্স সাথে নিন।
- কিছু শুকনো খাবার, ড্রাইফুড সাথে নিয়ে নিন।
- ছাতা, রেইনকোট, বুট, ক্যাপ, ব্যাগে রাখুন। কারণ, এখন বৃষ্টির মওসুম। রোদের জন্য সানগ্লাস, সা্ন ক্রিম সাথে রাখুন। রাবারের জুতা, চপ্পলও ব্যাগে রাখুন। কাদাপানিতে হাঁটতে সুবিধা হবে।
- মোবাইল ফোনের চার্জার, টর্চলাইট, এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, প্রয়োজন অনুযায়ী নগদ অর্থ এবং মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত ব্যালেন্স আগে থেকে ভরে নিন। এসব প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যাগে ভরে নিন।
- ভ্রমণের যাতায়াতের টিকিট, পাস অবশ্যই আপনার হাতব্যাগে কিংবা মানিব্যাগে রাখুন। আপনার নিজস্ব ভিজিটিং কার্ড, ফোন ও ডায়েরি সাথে নিন।
- ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা সাথে নিন। 
বেড়ানোর সময়ও খেয়াল রাখুন
- বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। খোলামেলা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার খাওয়া যাবে না।
- গোসলেও বিশুদ্ধ, পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে হবে। তাই পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বা ফিটকিরি সাথে রাখুন।
- ডায়রিয়া, বমি হলে স্যালাইন ওয়াটার পান করুন। মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার করুন, এতে চুল ও ত্বক রুক্ষ্ম হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। 
- হালকা গরম পানিতে অল্প লবণ মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর তোয়ালে দিয়ে পা মুছে ময়েশ্চারাইজ যুক্ত লোশন দিয়ে পা ম্যাসাজ করে নিন। এতে পায়ের ত্বক ভালো থাকবে আর ক্লান্তি দূর হবে। ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত মেকআপ না নেয়াই ভালো। প্রতিদিনের মেকআপ একটু সময় নিয়ে উঠিয়ে ফেলতে হবে। না হলে ত্বকের ক্ষতি হয়। মেকআপ উঠিয়ে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন। নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
- পরিমিত খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- ভ্রমণের সময় অপরিচিত লোকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
- হোটেলের রুম আগেই বুকিং দিয়ে রাখতে পারলে ভালো হয়। তাহলে পৌঁছে রুম খুঁজে সময় নষ্ট করতে হবে না।
- বাজারের প্রক্রিয়াজাত পানীয় না কিনে আখের রস, ডাবের পানি ও তাজা ফলের রস পান করুন। বেশি করে মওসুমি ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- ভ্রমণের সময় ত্বক ও হাত-পা, চুলের বিশেষ যত্নও নেয়া প্রয়োজন। সানপ্রোটেক্ট লোশন ও ক্রিম সূর্যের আলোতে বের হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে ব্যবহার করুন। ধুলো-ময়লা বেশি, এমন সব স্থানে পায়ে স্কিনমোজা ব্যবহার করুন। কিছুটা প্রস্তুতি নিন তার পর বেরিয়ে পডুন আপনার পছন্দের জায়গায়।





আজ এ পর্য‍ন্তই। ভালো থাকবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।