রঙে ঢঙে রাঙ্গামাটি ।
‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু।’
সেই সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে হলে কর্মব্যস্ততা দূরে সরিয়ে রেখে মাঝেমধ্যে দু-চার দিনের জন্য বেড়িয়ে পরার বিকল্প নেই। যদি তাই হয়, তাহলে গন্তব্যের তালিকায় প্রথমে রাঙ্গামাটি থাকলে আপনি ঠকবেন না- এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এ দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অনন্য দান। সুতরাং ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা...’ মনে মনে গাইতে গাইতে এই ঈদের ছুটিতে চলে যান রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য সুধা পান করতে। তার আগে জেনে নেয়া যাক রাঙ্গামাটি ভ্রমণ সহায়ক দু-চারটি কথা। এবং চোখ বুলিয়ে নিন সেই সমস্ত জায়গাগুলোর উপর, আপনি যেসব অবশ্যই দেখবেন।
কাপ্তাই লেক : সত্য কথা বলতে কি, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের সম্পূর্ণটাই সৌন্দর্যে ভরপুর। সমস্ত এলাকা তন্ন তন্ন করে চষে বেড়ালেও আপনার মুগ্ধতা শেষ হবে না। উল্টো আপনার কৌতূহল বাড়তেই থাকবে। প্রকৃতি এত সুন্দর! তবে কাপ্তাই লেককে প্রাকৃতিক বললে ভুল হয়ে যাবে। বৃটিশ আমলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে কর্ণফুলী নদীর গতি মুখ ঘুরিয়ে দেয়া হয়। ফলে পাহাড়ের ফাঁক ফোঁকড়ের সমতল আবাদি জমিগুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে বিশাল এক সরোবরে পরিণত হয়। এটি কাপ্তাই লেক বলে পরিচিত।
লেকের নীল জল যে কারও হৃদয় শীতল করে দেয়। সম্পূর্ণ লেকটিকে আবৃত করে রেখেছে পর্বত শ্রেণি। এই লেকের জলে নৌকায় ভেসে বেড়ানো যে কারোর জন্য স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। আপনিও ভেসে বেড়ান, উপভোগ করুন জল-পর্বতের ব্যাঞ্জনায় অপরূপ সৌন্দর্য। রাঙ্গামাটি শহর এবং কাপ্তাই পর্যটন স্পট সংযুক্ত হয়েছে চমৎকার একটি সড়কের মাধ্যমে। যেতে যেতে সড়কটি প্রবেশ করেছে পার্বত্য এলাকার গভীরে।
শুভলং ঝরনা : জেলার সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর মধ্যে শুভলং ঝরনা একটি। প্রায় সকলেই রাঙ্গামাটি ভ্রমণে এলে সবার আগে শুভলং দেখতে যান। এই ঝরনা দেখতে সর্বক্ষণ পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে ঝরনাটি পতিত হয়েছে কাপ্তাই লেকে। শুভলং-এর নিকটে যেতে বাধা নেই, ফলে ঝরনার রূপ মাধুর্য প্রাণ ভরে উপভোগ করতে বাধা নেই। সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌকা। শহরের রিজার্ভ বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শুভলং যাতায়াতের জন্য ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, স্পিডবোট ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া গুণতে হবে।
শুভলং বাজার : গ্রামীণ বাজার মানেই আলাদা দর্শণীয় জায়গা। বাংলাদেশ যেহেতু গ্রামপ্রধান, তাই বর্ণিল বাজারগুলো এখানকার শোভা। শুভলং বাজারের অবস্থান পার্বত্য এলাকায়। সুতরাং, এখানকার সাজশয্যা অন্য বাজারের থেকে খানিক ভিন্ন। বাজারের পণ্য সামগ্রীও ভিন্ন। যেমন বিন্নিচাল, তিতগুলা, তিতবেগুন, বাঁশপ্রোল, গোমাইত্যা, শিমে আলু, তারা ডাটা প্রভৃতি। এগুলো স্থানীয়দের নিত্যদিনের খাবার। অথচ দেখুন এ সবের নামই আমরা শুনিনি। রাঙ্গামাটির রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় নানা ধরনের পাহাড়ি খাবার। পাওয়া যায় তাদের হাতে বোনা ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গামছা, গায়ের চাদর, কম্বল ইত্যাদি। আপনার পছন্দেরটি চাইলে সেখান থেকেই কিনতে পারবেন। বাজারে যেতে হলে শুভলং ঝরনার পথেই যেতে হয়।
রাজবন বিহার : দেশের সর্ববৃহৎ এই জেলার বেশ কয়েকটি নিদর্শনের মধ্যে রাজবন বৌদ্ধ বিহার একটি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিকট এটি পবিত্র স্থান। আধ্যাত্মিক মন্দির বলেও এর পরিচিতি বা নাম রয়েছে। মন্দিরের দৃষ্টিনন্দন গঠনের জন্য সাধারণ পর্যটকের নিকটও এটি আকর্ষণীয় জায়গা।
কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক : জাতীয় এই উদ্যানের অবস্থান কর্ণফুলী নদী ও কাপ্তাই মাউন্টেইন রেঞ্জের মাঝামাঝি। ৫,৪৬৪.৭৮ হেক্টর এলাকা নিয়ে ১৯৯৯ সালে এর প্রতিষ্ঠা। উদ্যান ঘোষণার আগে শিতা পাহাড় সংরক্ষিত বনাঞ্চল বলে পরিচিত ছিল। এই উদ্যানে রয়েছে বহু পুরনো বৃক্ষ, যেগুলি ১৮৭৩ সালে রোপণ করা হয়েছিল। যে কেউ এই বনের প্রেমে পড়ে যেতে পারেন। বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে হরিণ, বনবিড়াল, হাতি, বানর এবং অন্যান্য প্রাণী। বিলুপ্তপ্রায় বেশ কয়েক প্রকার পাখিও রয়েছে। আর অন্যান্য পাখি তো আছেই তাই পাখি প্রেমীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা বটে। বর্তমানে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান বন্যপশু ও পাখিদের জন্য এক অভয়ারণ্য। এখানে বন বিভাগ নির্মাণ করেছে পিকনিক স্পট ও রেস্তোরাঁ। পাহাড়ি বন্য পরিবেশে নিরিবিলি রেস্তোরাঁয় পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে খাওয়াও এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
ঝুলন্ত সেতু : দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতির পেছনে এখন পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পরেই যার স্থান তা হলো রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। দৃষ্টিনন্দন সেতুটি কাপ্তাই লেকেরই বিশেষ এক অংশে স্থাপিত। সেতুকে কেন্দ্র করে এখানে রয়েছে একাধিক ক্যাটাগরির বোটিং সেবার আয়োজন। এখন বর্ষা চলমান, সুতরাং লেক এবং তার চারপাশের প্রকৃতিতে লেগেছে যৌবনের ছোঁয়া। পানিতে টইটুম্বুর লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু আর তার এপার থেকে ওপারের দিকে আপনি পায়ে হেঁটে এগিয়ে হচ্ছেন, ভেবে দেখু কেমন হতে পারে সে অনুভূতি!
প্যাদা টিং টিং : কাপ্তাই লেকের একটি অংশের মাঝখানে দ্বীপের মত জায়গাটিতে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে, নাম প্যাদা টিং টিং। সেখানে মোটামুটি স্বল্প খরচে পাহাড়ি খাবারের হরেক পদ থেকে বেছে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের খাবার। মন্ডি, নুডুল মন্ডি, চিকেন চাটনি ইত্যাদি এখানকার জনপ্রিয় পদ। বিশেষ করে সেখানে গিয়ে কলাপাতা ও বাঁশের চোঙার মধ্যে রান্না করা মুরগির মাংস অথবা মাছ খেতে ভুলবেন না।
টুর অপারেটরদের প্যাকেজ :
লেজার টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস : ৩ দিন ২ রাতের পাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৭৫০ টাকা। প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত ঢাকা-রাঙ্গামাটি-ঢাকা বাস সার্ভিস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেলে থাকার ব্যবস্থা, দৈনিক সকালের নাস্তা, সাইটসিং এবং অভিজ্ঞ গাইড সুবিধা। ফোন : ০১৭১৪৫৫৫৫৫৫, ৯৯৩৪৮১৭৯
গ্রীন বাংলাদেশ টুরস : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজ মূল্য ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০২-৮৬৫২২৫৪, ০১৮১৯-৪৮০৫৪০
ক্যাপ্টেইন হলিডেজ : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০১৯৭৭০৫৮৪৫২
যদি নিজ ব্যবস্থাপনায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে চান সে জন্য আপনার সুবিধার্থে দিয়ে দেয়া হলো বাস কাউন্টার ও হোটেল, রিসোর্ট এবং মোটেলের কিছু তথ্য:
হোটেল সুফিয়া ইন্টারন্যাশনাল, কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬২১৪৫, ০১৭১৫-২৫১৮৪৬। ঢাকা রিজার্ভেশন কার্যালয়, ফোন : ০২-৮৮২৬৭৫৯, ০১৮১৯-২২৪৫৯৩
পর্যটন হলিডে কমেপ্লেক্স (পর্যটন মোটেল), ডিয়ার পার্ক, তবলছরি, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬৩১২৬, ৬১০৪৬
ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস ঢাকা-রাঙ্গামাটি রুটে চলাচল করে।
শ্যামলী পরিবহন, ঢাকা কলাবাগান কাউন্টার : ০২-৯১৪১০৪৭, ০১৭১১-১৩০৮৬২। কাপ্তাই কাউন্টার: ০১৮১৩-৯৬৯৭১৯।
সৌদিয়া, ঢাকা ফকিরাপুল কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৫৮, কলাবাগান কাউন্টার: ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭, রাঙ্গামাটি কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭।
অবসর সময়ে বেড়িয়ে আসুন,একঘেয়েমি দূর হবে আর কাজে পাবেন পূর্ণ্ উদ্যোম। ধন্যবাদ সবাইকে।
‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু।’
সেই সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে হলে কর্মব্যস্ততা দূরে সরিয়ে রেখে মাঝেমধ্যে দু-চার দিনের জন্য বেড়িয়ে পরার বিকল্প নেই। যদি তাই হয়, তাহলে গন্তব্যের তালিকায় প্রথমে রাঙ্গামাটি থাকলে আপনি ঠকবেন না- এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এ দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অনন্য দান। সুতরাং ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা...’ মনে মনে গাইতে গাইতে এই ঈদের ছুটিতে চলে যান রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য সুধা পান করতে। তার আগে জেনে নেয়া যাক রাঙ্গামাটি ভ্রমণ সহায়ক দু-চারটি কথা। এবং চোখ বুলিয়ে নিন সেই সমস্ত জায়গাগুলোর উপর, আপনি যেসব অবশ্যই দেখবেন।
কাপ্তাই লেক : সত্য কথা বলতে কি, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের সম্পূর্ণটাই সৌন্দর্যে ভরপুর। সমস্ত এলাকা তন্ন তন্ন করে চষে বেড়ালেও আপনার মুগ্ধতা শেষ হবে না। উল্টো আপনার কৌতূহল বাড়তেই থাকবে। প্রকৃতি এত সুন্দর! তবে কাপ্তাই লেককে প্রাকৃতিক বললে ভুল হয়ে যাবে। বৃটিশ আমলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে কর্ণফুলী নদীর গতি মুখ ঘুরিয়ে দেয়া হয়। ফলে পাহাড়ের ফাঁক ফোঁকড়ের সমতল আবাদি জমিগুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে বিশাল এক সরোবরে পরিণত হয়। এটি কাপ্তাই লেক বলে পরিচিত।
লেকের নীল জল যে কারও হৃদয় শীতল করে দেয়। সম্পূর্ণ লেকটিকে আবৃত করে রেখেছে পর্বত শ্রেণি। এই লেকের জলে নৌকায় ভেসে বেড়ানো যে কারোর জন্য স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। আপনিও ভেসে বেড়ান, উপভোগ করুন জল-পর্বতের ব্যাঞ্জনায় অপরূপ সৌন্দর্য। রাঙ্গামাটি শহর এবং কাপ্তাই পর্যটন স্পট সংযুক্ত হয়েছে চমৎকার একটি সড়কের মাধ্যমে। যেতে যেতে সড়কটি প্রবেশ করেছে পার্বত্য এলাকার গভীরে।
শুভলং ঝরনা : জেলার সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর মধ্যে শুভলং ঝরনা একটি। প্রায় সকলেই রাঙ্গামাটি ভ্রমণে এলে সবার আগে শুভলং দেখতে যান। এই ঝরনা দেখতে সর্বক্ষণ পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে ঝরনাটি পতিত হয়েছে কাপ্তাই লেকে। শুভলং-এর নিকটে যেতে বাধা নেই, ফলে ঝরনার রূপ মাধুর্য প্রাণ ভরে উপভোগ করতে বাধা নেই। সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌকা। শহরের রিজার্ভ বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শুভলং যাতায়াতের জন্য ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, স্পিডবোট ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া গুণতে হবে।
শুভলং বাজার : গ্রামীণ বাজার মানেই আলাদা দর্শণীয় জায়গা। বাংলাদেশ যেহেতু গ্রামপ্রধান, তাই বর্ণিল বাজারগুলো এখানকার শোভা। শুভলং বাজারের অবস্থান পার্বত্য এলাকায়। সুতরাং, এখানকার সাজশয্যা অন্য বাজারের থেকে খানিক ভিন্ন। বাজারের পণ্য সামগ্রীও ভিন্ন। যেমন বিন্নিচাল, তিতগুলা, তিতবেগুন, বাঁশপ্রোল, গোমাইত্যা, শিমে আলু, তারা ডাটা প্রভৃতি। এগুলো স্থানীয়দের নিত্যদিনের খাবার। অথচ দেখুন এ সবের নামই আমরা শুনিনি। রাঙ্গামাটির রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় নানা ধরনের পাহাড়ি খাবার। পাওয়া যায় তাদের হাতে বোনা ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গামছা, গায়ের চাদর, কম্বল ইত্যাদি। আপনার পছন্দেরটি চাইলে সেখান থেকেই কিনতে পারবেন। বাজারে যেতে হলে শুভলং ঝরনার পথেই যেতে হয়।
রাজবন বিহার : দেশের সর্ববৃহৎ এই জেলার বেশ কয়েকটি নিদর্শনের মধ্যে রাজবন বৌদ্ধ বিহার একটি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিকট এটি পবিত্র স্থান। আধ্যাত্মিক মন্দির বলেও এর পরিচিতি বা নাম রয়েছে। মন্দিরের দৃষ্টিনন্দন গঠনের জন্য সাধারণ পর্যটকের নিকটও এটি আকর্ষণীয় জায়গা।
কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক : জাতীয় এই উদ্যানের অবস্থান কর্ণফুলী নদী ও কাপ্তাই মাউন্টেইন রেঞ্জের মাঝামাঝি। ৫,৪৬৪.৭৮ হেক্টর এলাকা নিয়ে ১৯৯৯ সালে এর প্রতিষ্ঠা। উদ্যান ঘোষণার আগে শিতা পাহাড় সংরক্ষিত বনাঞ্চল বলে পরিচিত ছিল। এই উদ্যানে রয়েছে বহু পুরনো বৃক্ষ, যেগুলি ১৮৭৩ সালে রোপণ করা হয়েছিল। যে কেউ এই বনের প্রেমে পড়ে যেতে পারেন। বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে হরিণ, বনবিড়াল, হাতি, বানর এবং অন্যান্য প্রাণী। বিলুপ্তপ্রায় বেশ কয়েক প্রকার পাখিও রয়েছে। আর অন্যান্য পাখি তো আছেই তাই পাখি প্রেমীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা বটে। বর্তমানে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান বন্যপশু ও পাখিদের জন্য এক অভয়ারণ্য। এখানে বন বিভাগ নির্মাণ করেছে পিকনিক স্পট ও রেস্তোরাঁ। পাহাড়ি বন্য পরিবেশে নিরিবিলি রেস্তোরাঁয় পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে খাওয়াও এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
ঝুলন্ত সেতু : দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতির পেছনে এখন পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পরেই যার স্থান তা হলো রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। দৃষ্টিনন্দন সেতুটি কাপ্তাই লেকেরই বিশেষ এক অংশে স্থাপিত। সেতুকে কেন্দ্র করে এখানে রয়েছে একাধিক ক্যাটাগরির বোটিং সেবার আয়োজন। এখন বর্ষা চলমান, সুতরাং লেক এবং তার চারপাশের প্রকৃতিতে লেগেছে যৌবনের ছোঁয়া। পানিতে টইটুম্বুর লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু আর তার এপার থেকে ওপারের দিকে আপনি পায়ে হেঁটে এগিয়ে হচ্ছেন, ভেবে দেখু কেমন হতে পারে সে অনুভূতি!
প্যাদা টিং টিং : কাপ্তাই লেকের একটি অংশের মাঝখানে দ্বীপের মত জায়গাটিতে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে, নাম প্যাদা টিং টিং। সেখানে মোটামুটি স্বল্প খরচে পাহাড়ি খাবারের হরেক পদ থেকে বেছে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের খাবার। মন্ডি, নুডুল মন্ডি, চিকেন চাটনি ইত্যাদি এখানকার জনপ্রিয় পদ। বিশেষ করে সেখানে গিয়ে কলাপাতা ও বাঁশের চোঙার মধ্যে রান্না করা মুরগির মাংস অথবা মাছ খেতে ভুলবেন না।
টুর অপারেটরদের প্যাকেজ :
লেজার টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস : ৩ দিন ২ রাতের পাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৭৫০ টাকা। প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত ঢাকা-রাঙ্গামাটি-ঢাকা বাস সার্ভিস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেলে থাকার ব্যবস্থা, দৈনিক সকালের নাস্তা, সাইটসিং এবং অভিজ্ঞ গাইড সুবিধা। ফোন : ০১৭১৪৫৫৫৫৫৫, ৯৯৩৪৮১৭৯
গ্রীন বাংলাদেশ টুরস : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজ মূল্য ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০২-৮৬৫২২৫৪, ০১৮১৯-৪৮০৫৪০
ক্যাপ্টেইন হলিডেজ : ২ দিন ৩ রাতের প্যাকেজের জন্য খরচ হবে ৫,৫০০ টাকা। ফোন : ০১৯৭৭০৫৮৪৫২
যদি নিজ ব্যবস্থাপনায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে চান সে জন্য আপনার সুবিধার্থে দিয়ে দেয়া হলো বাস কাউন্টার ও হোটেল, রিসোর্ট এবং মোটেলের কিছু তথ্য:
হোটেল সুফিয়া ইন্টারন্যাশনাল, কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬২১৪৫, ০১৭১৫-২৫১৮৪৬। ঢাকা রিজার্ভেশন কার্যালয়, ফোন : ০২-৮৮২৬৭৫৯, ০১৮১৯-২২৪৫৯৩
পর্যটন হলিডে কমেপ্লেক্স (পর্যটন মোটেল), ডিয়ার পার্ক, তবলছরি, রাঙ্গামাটি। ফোন : ০৩৫১-৬৩১২৬, ৬১০৪৬
ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস ঢাকা-রাঙ্গামাটি রুটে চলাচল করে।
শ্যামলী পরিবহন, ঢাকা কলাবাগান কাউন্টার : ০২-৯১৪১০৪৭, ০১৭১১-১৩০৮৬২। কাপ্তাই কাউন্টার: ০১৮১৩-৯৬৯৭১৯।
সৌদিয়া, ঢাকা ফকিরাপুল কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৫৮, কলাবাগান কাউন্টার: ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭, রাঙ্গামাটি কাউন্টার : ০১৯১৯-৬৫৪৮৩৭।
অবসর সময়ে বেড়িয়ে আসুন,একঘেয়েমি দূর হবে আর কাজে পাবেন পূর্ণ্ উদ্যোম। ধন্যবাদ সবাইকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন