শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৪

ভ্রমণ :: মৌলভীবাজার, সিলেট -৩।

 পাহাড়ের সৌন্দর্য চায়ের ঘ্রাণে 



শ্রীমঙ্গলের রমেশ রামগৌড়ের সাতরঙ্গের চা : পর্যটকদের বিস্ময়
তিনি বাস করেন শ্রীমঙ্গলে। এখানে এখন তিনি দারুন জনপ্রিয়। তবে তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাওয়ে। তার নাম রমেশ রাম গৌড়। কিন্তু এ নামের চেয়ে তার অন্য একটি পরিচিতি এখন শ্রীমঙ্গল ছাড়িযে বাংলাদেশের অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।তা হলো- রমেশ রাম গৌড়ের সাত রংয়ের চা। শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বিস্মিত করে। লাউয়্যাছড়ায় ঘুরতে আসা পর্যটক সাত রঙের চা পান করেনি এমনটি খুব একটা হয়নি। এ চা পান করতে এেসছেন দেশের বিখ্যাত এবং স্বনামধন্যরা। এর থেকে বাদ পড়েননি সাবেক রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধানসহ গায়ক শিল্পী রাজনীতিবিদরাও। তাদের সাথে  তোলা ছবি স্বগৌরবে টাঙ্গিয়ে রেখেছেন তার -নীলকন্ঠ চা কেবিনে। রংয়ের সাথে স্বাদও ভিন্ন ভিন্ন এ চা প্রতি কাপ ৭০ টকা। অনেক গোপনীয়তায় তৈরী করেন এ চা। এক বারের লিকার দিয়ে একবারই চা বানানো যায়, তাই প্রতি লেয়ারের জন্য রাখা হয় ১০টাকা।লিকারটি ঠান্ডা হয়ে গেলে আর তা দিয়ে চা বানানো যায় না। শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট সড়কের বিডিআর ক্যান্টিনটি এখন নীল কন্ঠের জণ্য রাতারাতি ব্যিখাত হয়ে গেছে ।
রমেশ জানান, শুধুমাত্র আগ্রহ থেকেই এক বছর চেষ্টার পর এটা আবিস্কার করতে সমর্থ হন। ভবিষ্যত পরিকল্পনা ১০ রঙয়ের চা বানানোর। এ চা বানানোর কৌশল জানতে কানাডার এক ব্যক্তি তাকে ১কোটি টাকা প্রস্তাব করেছিল, তাতেও তিনি রাজি হননি। এ চা বানানোর কৌশল শিখিয়েছেন ৩ ছেলে রাজু, রাজীব ও দীপ্তকে।
মনিপুরী ও খাসিয়া সংস্কৃতি সমতলের মানুষকেও টানে প্রবলভাবে
শ্রীমঙ্গলে এসে পাহাড়ে চড়বো না,তা কী হয়। পাহাড়ের চূড়ায় বাস করে স্থানীয় খাসিয়া আদিবাসীরা। উচু-নিচু, আকাঁ-বাকাঁ-সর্পিল পথে সাহসের সাথে জীপ চালায় ড্রাইভাররা। পাহরের উচুতে খাসিয়াদের অভ্যর্থনা আগতদের অভিভূত করে। ‘খ্যুবলাই’ বলে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। খাসিয়া ভাষায় খ্যুবলাই মানে নমস্কার বা সালাম। খাবার পর অতিথিদের পান না খাইয়ে ছাড়বেই না তারা। ছোট শিশুদের অবাক দৃষ্টি যেন এক বিস্ময়। খাসিয়া ও মনিপুরী সংস্কৃতি সমতলের মানুষকে টেনে নিয়ে যায় পাহাড়ের উচু চূড়ায় মনিপুরীদের তাঁত বোনা, খাসিয়াদের বড়দিনের অনুষ্ঠান এবং মনিপুরী নৃত্য : এ যেন এক পার্বত্য এবং সমতলের মেলবন্ধন। মাতৃতান্ত্রিক খাসিয়ারা প্রমান করেছে প্রযুক্তির ব্যবহারে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। বাড়িতে ব্যবহার করছেন সোলার প্রযুক্তি। ঘরে ঘরে এখন টেলিভিশন। পাহারের ঢালুতে ছড়ায় গোসল সারেন মহিলারা। চূড়ায় কবরে খ্রিস্টান রীতিতে সমাহিত করা হয় মৃতদের । বিয়ে হয় খ্রিস্টান রীতিতে। বিয়ের রাতে শুকরের মাংস, বন্য হরিন বন্য মোড়গ রান্না করে ভোজের আয়োজন করে সবাই মিলে। মাতৃতান্ত্রিক হওয়ায় বিয়ের পর খাসিয়া বর চলে যায় বৌয়ের বড়িতে। 





সময় করে ঘুরে আসুন; সাত রং এর চা খেয়ে আসুন। ধন্যবাদ সবাইকে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন