পাহাড়ে ভ্রমণ যাদের বেশি পছন্দ, এবারের ঈদের ছুটিতে তারা বেড়িয়ে পড়ুন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে। বর্ষায় যারা পাহাড় দেখেননি ঈদের ছুটিটা তাদেও জন্য মোক্ষম সুযোগ।
বৃষ্টিভেজা সবুজ পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে বেড়াতে ভালো লাগবে এসময়। বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্রমণ করা যায় এসব জায়গা নিয়ে এবারের বেড়ানো।
পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম ভ্রমণ স্বর্গ বান্দরবান জেলা। এখানে রয়েছে বেড়ানোর মতো অনিন্দ সুন্দর সব জায়গা। যেদিকেই চোখ যায় শুধুই যেন সুন্দরের খেলা। ছোট্ট শহর বান্দরবানের এক পাশেই আছে বোমাং রাজার বাড়ি। এ রাজবাড়িতেই এখনও রাজার উত্তরসূরীরা বসবাস করেন। শহর বান্দরবানের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পাহাড়ী নদী সাঙ্গু।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বান্দরবান চন্দ্রঘোনা সড়কের পুল পাড়ায় রয়েছে জাদির পাহাড়। এ পাহাড়ের মাথায় আছে আকর্ষণীয় একটি স্বর্ণ মন্দির। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরের নাম বুদ্ধধাতু জাদি। শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের পাশেই রয়েছে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স। অপরূপ প্রকৃতির মাঝে এখানে আছে ঝুলন্ত ব্রিজ, চিড়িয়াখানা। শহরের কাছে সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের নাম নীলাচল। শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে টাইগার পাড়ায় এ পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় এক হাজার ফুট। এখানে দাঁড়িয়ে বান্দরবান শহরসহ দূর দূরান্তের অনেক জায়গার সৌন্দর্য দেখা যায়।
বান্দরবান শহর থেকে চিম্বুক যাওয়ার পথে মনোরম একটি জায়গা শৈলপ্রপাত। শহর থেকে দূরত্ব আট কিলোমিটার। এখানকার হিম শীতল ঝরনাধারা সারা বছর জুড়েই বহমান। শৈল প্রপাতের পাশেই রয়েছে স্থানীয় আদিবাসীদের একটি ভ্রাম্যমাণ বাজার। তাদের তৈরি চাদর আর পাহাড়ি ফলমূল কিনতে পারেন এ বাজার থেকে। আর পাশেই আছে বম আদিবাসীদের একটি গ্রাম। শৈল প্রপাত থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চিম্বুক পাহাড়। চিম্বুক পাহাড়ের চূড়া থেকে দেখা যায় চারদিকের সবুজ আর অবারিত দিগন্ত।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ২শ’ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি মনোরম পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরি। সেনাবাহিনী পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রে থাকার জন্য ভালো মানের কটেজ আছে। নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে যেদিকে চোখ যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। কখনও কখনও এখানে পর্যটকদের সঙ্গে মেঘের মিতালিও হয়। বান্দরবান শহর থেকে দিনে দিনে জায়গাটি ঘুরে, ফিরে আসা সম্ভব। এখানে যাওয়া আসার জন্য একটি জিপের ভাড়া পড়বে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান যায় শ্যামলী ও সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস। ভাড়া সাড়ে ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা।
আরও আছে এস আলম সার্ভিস, ডলফিন পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন এবং ইউনিক সার্ভিস। প্রতিদিন সকালে ও রাতে, কলাবাগান ফকিরাপুল এবং কমলাপুর থেকে ছাড়ে বাসগুলো। ভাড়া সাড়ে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা।
এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়েও বান্দরবান যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের বাসগুলো ছাড়ে বদ্দারহাট বাস স্টেশন থেকে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয় রুটে পূর্বানী ও পূরবী পরিবহনের বাসগুলো চলাচল করে। ভাড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
বান্দরবানে থাকার জন্য ভালো জায়গা হল: পর্যটন মোটেল (০৩৬১-৬২৭৪১)। মিলনছড়িতে গাইড ট্যুরসের হিলসাইড রিসোর্ট, ঢাকার এই নম্বরে ৯৮৮৬৯৮৩ বুকিং দেওয়া যায়।
এছাড়া বান্দরবানের অন্যান্য হোটেলগুলোর মধ্যে আছে হলিডে ইন (০১৮৫৬৬৯৯৯১১)। প্লাজা বান্দরবান (০৩৬১-৬৩২৫২)। হোটেল পূরবী (০৩৬১-৬২৫৩১) ইত্যাদি। এসব হোটেলে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় কক্ষ আছে।
আপনাদের ভ্রমণ আনন্দদায়ক হোক, এই কামনায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন