ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার
(সমুদ্র যাদের বেশি প্রিয়, এবারের ঈদের ছুটিতে তারা ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে পারেন কক্সবাজার।)
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ সমুদ্র সৈকতে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় থাকে। তাই নীল জলের হাতছানিতে সাড়া দিতে আগেভাগেই সেখানকার হোটেল, যাতায়াত ইত্যাদির আগাম ব্যবস্থা করে ফেলা উচিত।
ঋতু হিসেবে ঈদের ছুটি বর্ষাকালে না হলেও, এই মৌসুমে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা বৃষ্টি উপভোগ করতে পারবেন। এ সময়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একটু ভিন্ন আমেজেই থাকে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন সমুদ্র সবসময়ই একটু উত্তাল, ঢেউগুলোও তাই বেশ বড় বড়।
কক্সবাজার ভ্রমণে বেড়ানোর প্রধান জায়গা সমুদ্র সৈকত। বালুকাবেলায় চেয়ারে গা এলিয়ে বসে সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ দেখে হারিয়ে যেতে পারেন অজানা কোনো ভূবনে।
এ সময়ে সমুদ্রে না নামাই ভালো। আর নামলেও খুব সাবধানতা অবলম্বন করুন। সৈকতে লাল পতাকা নির্দেশিত সময় অর্থাৎ ভাটার সময় কখনোই সমুদ্র স্নানে যাবেন না। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময় সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো মিস করবেন না।
সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে বেড়াতে পারেন হিমছড়ি, ইনানী, রামু কিংবা ডুলাহাজরা।
হিমছড়িতে পাহাড় আর সমুদ্রের মিতালি। আরো আছে হিম শীতল ছোট ছোট পাহাড়ি ঝরনা। হিমছড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা কিংবা জিপ আছে। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ির দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। সেখান থেকে আরও প্রায় আট কিলোমিটার সামনে গেলে আছে ইনানী সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতের সঙ্গে সেন্টমার্টিনের সৈকতের অনেকটা মিল আছে। এক দিনেই জায়গা দুটি বেড়ানো যায়।
কক্সবাজার শহরের পার্শ্ববর্তী থানা রামুতে আছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বেশ কিছু কেয়াং ও প্যাগোডা। সন্ত্রাসীদের হামলায় নস্ট হয়ে যাওয়া এসব মন্দিরগুলো আবারও নতুন আঙ্গিকে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হয়েছে। দেখে আসতে পারেন এসব মন্দিরগুলো।
এছাড়া চকোরিয়ার ডুলাহাজরায় আছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। সেখানে গিয়েও দেখে আসতে পারেন নানান বন্যপ্রাণী। প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা থাকে ডুলাহাজরার এ সাফারি পার্ক। কক্সবাজারের কলাতলী থেকে জিপে কিংবা মাইক্রোবাসে জায়গা দুটিতে যাওয়া যায়।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও আকাশ পথে সরসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়। এ পথে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, সোহাগ, হানিফ, টি আর ইত্যাদি পরিবহন সংস্থার এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ১ হাজার ৬শ’ টাকা ২ হাজার ৫০ টাকা। এছাড়া এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিক, ঈগল, হানিফ, ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসও চলে এ পথে। ভাড়া সাড়ে ৭শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থেকে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারের বিমানে সরাসরি যেতে পারেন কক্সবাজার।
হোটেল
কক্সবাজারে থাকার জন্য প্রচুর হোটেল রয়েছে। ধরণ অনুযায়ী এ সব হোটেলের প্রতি দিনের কক্ষ ভাড়া ৩শ’ থেকে ২৫ হাজার টাকা। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হোটেল হল-
হোটেল সী গাল, ফোন- ০৩৪১ ৬২৪৮০-৯১। হোটেল ওশান প্যারাডাইস, ফোন ০৩৪১ ৫২৩৭০। হোটেল লং বিচ, ফোন ০৩৪১ ৫১৮৪৩-৬। এ তিনটিই পাঁচ তারকা মানের হোটেল।
এছাড়াও কক্সবাজারের অন্যান্য ভালো মানের হোটেল হল: হোটেল সি প্যালেস, ফোন- ০৪৩১ ৬৩৬৯২। হোটেল কল্লোল, ফোন- ০৪৩১ ৬৪৭৪৮। হোটেল কোরাল রিফ, ফোন- ০৩৪১ ৬৪৭৪৪-৫। নিটল বে রিসোর্ট, ফোন- ০৩৪১ ৬৪২৭৮। ইউনি রিসোর্ট, ফোন- ০৩৪১ ৬৩১৮১।
হোটেল সিলভার সাইন, ফোন- ০৩৪১ ৬৪৮৯৩-৪। হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, ফোন- ০৩৪১ ৬২৮৮১-৫। ডমিনাস রিসোর্ট, ফোন- ০৩৪১ ৫২২০২-৫। হোটেল ডায়নামিক সি পার্ল, ফোন- ০৩৪১ ৫২২৪৮-৯। হোটেল অভিসার, ফোন- ০৩৪১ ৬৩০৬১।
এছাড়া কক্সবাজারে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রয়েছে হোটেল শৈবাল, ফোন- ০৩৪১ ৬৩২৭৪। মোটেল উপল, ফোন- ০৩৪১ ৬৪২৫৮। মোটেল প্রবাল, ফোন- ০৩৪১ ৬৩২১১। মোটেল লাবনী, ফোন- ০৩৪১ ৬৪৭০৩। পর্যটন করপোরেশনের ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকেও এসব হোটেলের বুকিং দেওয়া যায়, ফোন- ৯৮৯৯২৮৮-৯১।
ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন